কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ফৌজদারি মামলায় আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পাঁচ স্কুলছাত্র। এ মামলায় এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, তুচ্ছ ঘটনায় ছয় কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পাঁচজন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। এদিকে মামলার এজাহারে কী লেখা হয়েছে, তা বাদী জানেন না।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৯ অক্টোবর রাতে রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম দেবোত্তর কালীর পাঠ সার্বজনীন দুর্গামন্দির ভাঙচুরের অভিযোগে রাজারহাট থানায় একটি মামলা হয়। এ ঘটনায় এক কিশোরকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে তাকে মামলার ১ নম্বর আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। সে এবার এসএসসি পাস করেছে। সনদ অনুযায়ী তার বয়স এখনও ১৮ বছর হয়নি। অন্য পাঁচ আসামির মধ্যে একজন নবম শ্রেণির ছাত্র, তিনজন অষ্টম শ্রেণির এবং একজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এর মধ্যে চারজন একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং আরেকজন মাদরাসার।
মামলার বাদী ও মন্দির কমিটির সভাপতি তপন চন্দ্র রায় বলেন, সেদিন রাত সোয়া ১১টার দিকে আমি বাড়ি থেকে মন্দিরে যাচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ মন্দিরের পেছনে রাস্তার ধারের টিনের বেড়ায় জোরে শব্দ শুনে দৌড়ে যাই। আমাকে দেখে পাঁচটি ছেলে পালিয়ে যায়। তবে একজনকে দেখতে পেয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা আটক করেন। ওই কিশোরের হাতে কিংবা তার আশপাশে কোনো অস্ত্র বা লাঠিসোটা ছিল না। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার কোনো দোষ নেই; কিছু করেনি। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এর পর পুলিশ এজাহারে স্বাক্ষর চাইলে আমি তা করে দিই। কিন্তু এজাহারে কী লেখা হয়েছে, আমি তা জানি না।
সিঙ্গারডাবরীহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের চারজনই আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী। আগামী নভেম্বরে তাদের বার্ষিক পরীক্ষা। তুচ্ছ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া দুঃখজনক।
ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিক বলেন, মন্দির ভাঙচুরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কেউ হয়তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ভুল বুঝিয়ে বাদীকে দিয়ে মামলা করাতে পারেন।
কুড়িগ্রাম জজকোর্টের আইনজীবী সফিকুল ইসলাম বলেন, মামলায় অজামিনযোগ্য ধারা থাকায় ১ নম্বর আসামি এখনও জেল হাজতে রয়েছে বলে শুনেছি। রাজারহাট থানার ওসি রেজাউল করিম রেজা বলেন, বাদী নিজে থানায় উপস্থিত হয়ে মামলাটি করেছেন।