তৃতীয়বার মন্ত্রী হয়ে হাছান মাহমুদ পেলেন পররাষ্ট্রে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব

দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : নতুন মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের পর এবার তৃতীয়বারের মতো মন্ত্রী হলেন তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অর্পিত হলো তৃণমূল ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা নেতা ড. হাছান মাহমুদের ওপর।

হাছান মাহমুদ স্কুল জীবনেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের রাজনৈতিক জীবনে তিনি বারবার মৌলবাদী অপশক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমনকি কয়েকবার তার প্রাণনাশেরও চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু কোনো রক্তচক্ষু হাছান মাহমুদকে তার সংগ্রামের পথ থেকে পিছু হটাতে পারেনি। 

ড. হাছান মাহমুদের মধ্যে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং মেধার অপূর্ব সমন্বয় রয়েছে। তার সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এবং বিদেশেও তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। চলুন এক ঝলকে দেখে নেই তার জীবনোলেখ্য—

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) আসন থেকে টানা চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি এই আসন থেকে এক লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। 

মুহাম্মদ হাছান মাহমুদের জন্ম ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ জুন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি বয় স্কাউটের দলনেতা ছিলেন। জুনিয়র রেডক্রস টিমেরও সদস্য ছিলেন। আন্তঃবিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগতায়ও তিনি স্কুলের বিতর্ক দলের দলনেতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক দলের দলনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

ড. হাছান মাহমুদ ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিভাগে স্নাতক পাস করেন। তিনি ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনঅর্গানিক কেমিস্ট্রি (রসায়ন) বিষয়ে, ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের বেলজিয়ামের ব্রিজ ইউনিভার্সিটি অব ব্রাসেলস থেকে হিউম্যান ইকোলজি (পরিবেশ বিজ্ঞান) বিষয়ে এবং ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের বেলজিয়ামের ইউনিভার্সিটি অব লিবহা দু ব্রাসেলস থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তিনি ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ ইউনিভার্সিটি থেকে পরিবেশ রসায়নের ওপর পিএইচডি করেছেন।

ড. হাছান মাহমুদ ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমে চট্টগ্রাম শহরের জামালখান ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি হাজী মহসিন কলেজে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সামরিক শাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হন। পরে তিনি ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বের মাধ্যমে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য বিপুল বিজয় লাভ করে। ওই নির্বাচনের সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে নিবার্চনে প্রার্থী হতে না পারলেও তিনিই ছিলেন ওই নিবার্চনে সব প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে গঠিত সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান।

১৯৯২ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার কার্যকরী সংসদের সবচেয়ে নবীনতম সদস্য মনোনীত হন তিনি।

ড. হাছান মাহমুদ ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে বাংলাদেশের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির বিশেষ সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি একযোগে ২০০২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে নিযুক্ত হন। তখন থেকেই তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য। 

তিনি ২০০৯-২০১৩ সময়কালে তিনি পরিবেশ ও বন মন্ত্রী হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রী হিসেবে তার নিয়োগের পূর্বে ড. হাছান মাহমুদ একই সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস - dainik shiksha সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন - dainik shiksha এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত - dainik shiksha ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব - dainik shiksha সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো - dainik shiksha শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032038688659668