তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস মূল্যায়নে কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আগামী বছর থেকেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা না রাখার ব্যাপারে কাজ শুরু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে। এ পদ্ধতি প্রচলনের লক্ষ্যে ১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠিত সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়।। কমিটির সদস্যরা সবার মতামত নিয়ে মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করবে।  

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষার পরিবর্তে ক্লাসে কীভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে এনসিটিবি’র প্রণয়ন করা এমন একটি প্রস্তাবনা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা নিজ নিজ মতামত দেন।

সভার শেষ পর্যায়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জি এম হাসিবুল আলমকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এনসিটিবির তৈরি করা প্রস্তাবনাটি মূল্যায়ন ও প্রয়োজনে তা পরিবর্তন করে এ কমিটিকে পরবর্তী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোন পদ্ধতিতে ক্লাস মূল্যায়ন করা হবে সে বিষয়ে সভা হয়েছে। এ সভায় সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এনসিটিবির প্রণয়ন করা মূল্যায়ন প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সচিব আরো বলেন, সবাই নিজ নিজ মতামত দিয়েছেন। আমরা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে একটা কমিটি গঠন করেছি। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর জেলা পর্যায়ে শিক্ষকদের নিয়ে কর্মশালা করা হবে। এরপর জাতীয় পর্যায়ে একটি সেমিনার করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হবে। পাশাপাশি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দিয়ে ক্লাস মূল্যায়ন বিষয়ে শিক্ষাবিদদের মতামত নেয়া হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ক্লাস মূল্যায়ন কার্যকর করা হবে বলেও জানান সচিব।

ধারণা পত্র থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের শোনা-বলা-পড়া ও লেখা—এই চারটি বিষয়ের ওপর মূল্যায়ন করে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চারটি দক্ষতা অর্জনেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাঠের প্রকৃতি অনুযায়ী একই সঙ্গে শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর ধারাবাহিক মূল্যায়ন সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে শিক্ষক পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিক মূল্যায়ন শেষ করবেন। প্রতি মাসে একবার করে ধারাবাহিক মূল্যায়ন রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের কোনো নম্বর দেওয়া হবে না।

জানা যায়, শোনার ক্ষেত্রে শিশুদের আদেশ বা নির্দেশ দিয়ে তা পালন করানো, গল্প বা গল্পের অংশ শুনিয়ে প্রশ্ন করে তার উত্তর বলতে ও লিখতে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে রেকর্ডারও ব্যবহার করা হতে পারে। বলার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্পষ্টতা, শুদ্ধতা, প্রমিত উচ্চারণ, শ্রবণযোগ্যতা, সঠিক ছন্দে কথোপকথন, প্রশ্ন করা, অনুভূতি ব্যক্ত করা, বর্ণনা করা ও বাচনভঙ্গির ওপর মূল্যায়ন করা হবে। লেখার ক্ষেত্রে স্পষ্ট ও সঠিক আকৃতিতে লেখা, শূন্যস্থান পূরণ, এলোমেলো শব্দ বা বাক্য সাজিয়ে লেখাসহ নানা দিক দেখা হবে। তবে সুন্দর হাতের লেখার প্রতি বিশেষ জোর দেওয়া হবে। পড়ার ক্ষেত্রে সময়, উচ্চারণ, সাবলীলতা, গতি পরিমাপ করা, শুদ্ধতা, শ্রবণযোগ্যতা যাচাই করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023069381713867