ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে, তাদের গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র ছিলেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথি কক্ষে ৩২ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আর এ ঘটনায় আট ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা তালেবুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে শুরু থেকেই পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত ছিল। মামলার পর আমাদের ঊর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কাছে ৬ জন ছাত্রকে সোপর্দ করেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিছু ফাইন্ডিংস আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে, বাকি যারা জড়িত রয়েছে তাদের গ্রেফতার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।’
যেসব পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা এখনো অনুপস্থিত, আপনারা জানেন-আমাদের কিছু আইন ও বিধির মধ্যে চলতে হয়। চাকরিতে কিছু নিয়মকানুন আছে। সেই নিয়মকানুন, বিধি অনুযায়ী যদি কেউ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে চাকরি বিধি মেনে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ঢাকার ২২টি থানা আংশিক বা পরিপূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, সব মিলিয়ে ২১৬টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ে সংস্কার করে আগের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার। আমরা সীমিত রিসোর্সের মাধ্যমে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
ডিএমপির লুট হওয়া অস্ত্রের বিষয়ে এখনও ‘হিসাব-নিকাশ’ চলছে উল্লেখ করে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘যেহেতু অনেকগুলো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা এখনো পরিপূর্ণ তথ্য পাইনি। এটার কাজ চলছে, শেষ হলে আপনাদেরকে পরিপূর্ণ তথ্য দিতে পারব।’