আজ থেকে ৩১ বছর আগের কথা। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দ। আমি তখন জন্স হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দু'জন অধ্যাপককে প্রশ্ন করেছিলাম, তোমরা কবে একজন নারী রাষ্ট্রপতি পাবে?
তারা মজা করে জবাব দিয়েছিলেন, আগামী একশো বছর অপেক্ষার করার পর।
এবার কমলা হ্যারিস হেরে গেলে ওই অধ্যাপকদের কথার সত্যতা দ্বিতীয়বার প্রমাণিত হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন নিকৃষ্টতর রাষ্ট্রপতির একজন ধরা হয়। ট্রাম্প আবার নির্বাচিত হলে বুঝতে হবে, আমেরিকানরা একজন দুর্নামধারী মন্দ পুরুষকেও নির্বাচিত করতে রাজি আছে, কিন্তু কোনোভাবেই কোনো নারীকে নয়।
যুক্তরাষ্ট্র এখন পৃথিবীর প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তবে খুঁতমুক্ত অবশ্যই নয়। পুরো উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ৩৫টি রাষ্ট্রের মধ্যে মাত্র দুটিতে - উরুগুয়ে ও কানাডায় নিখুঁত গণতন্ত্র রয়েছে।
পুরনো মানেই সেরা নয়। সেরা হওয়ার প্রধান মাপকাঠি হলো- শুদ্ধাচার চর্চা, যা নবীনেরও থাকতে পারে। আমি ইতোমধ্যে ১৪৫টি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসের উপর সাতটি মোটা বই লিখেছি। ইতিহাস এমন সাক্ষ্যই দেয়। উরুগুয়ের গণতন্ত্র নবীন, কিন্তু সেরা। আমেরিকার গণতন্ত্র সবচেয়ে প্রাচীণ, কিন্তু সেরা নয়। কিছুটা ভেজাল। এটি আমার কথা নয়, মার্কিন গবেষকদেরই কথা।
তবে গণতন্ত্রে কিছুটা ত্রুটি থাকলেও, আমেরিকা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তাইতো সেখানকার গবেষকরা বলতে পারেন, আমাদের গণতন্ত্রে ভেজাল আছে।
আমরা জানি, ১০ নম্বরের মধ্যে ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ পাওয়া রাষ্ট্রকে ফুল ডেমোক্রেটিক রাষ্ট্র বলা হয়। ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ নম্বর পাওয়া রাষ্ট্রকে ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রের স্কোর ৭ দশমিক ৮৫, কানাডার ৮ দশমিক ৮৮, উরুগুয়ের ৮ দশমিক ৬৬। এশিয়া মহাদেশের রাষ্ট্র জাপানের স্কোর ৮ দশমিক ৪ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্কোর ৮ দশমিক ০৯।
লেখক: সাবেক সচিব, রাজনৈতিক ইতিহাস লেখক ও গবেষক