হঠাৎ করেই কীর্তনখোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের পাঁচটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার (প্রকৌশল) মহসীন আলম সুপ্ত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিভাগের মোট ২৩ নদীর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৯ নদীর পানি সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার সন্ধ্যার রিপোর্ট অনুযায়ী পাঁচ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে বিভাগের অনেক স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে।
জরিপ অনুযায়ী, ভোলার দৌলতখানে সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি, ভোলা খেয়া ঘাটে তেঁতুলিয়া নদীর পানি, ভোলার তজুমদ্দিন সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি, বিষখালী নদীর পানি পাথরঘাটা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানানো হয়, বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানির বিপৎসীমা রেখা ২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার হলেও তা ২ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভোলার দৌলতখান সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমা রেখা ৩ দশমিক ৪১ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ৩ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভোলা খেয়া ঘাটে তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমা রেখা ২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ২ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমা রেখা ২ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার হলেও ২ দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভোলার তজুমদ্দিন সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমা রেখা ২ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ৩ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমা রেখা ২ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার হলেও ১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমা রেখা ২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার রেখা অতিক্রম করে ২ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাথরঘাটা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমা ২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ৩ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমা রেখা ২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার হলেও ২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ। বিভিন্নস্থানে ফেরীর গ্যাংওয়ে তলিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এলাকাগুলোতে সুপেয় পানির অভাব দেখা গেছে। এছাড়া পানি কমে গেলে ভাঙনের আতঙ্ক বিরাজ করছে তাদের মাঝে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব কমে গেছে। তবে পূর্ণিমার কারণে কিছু কিছু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে তা আবার নেমে যাচ্ছে।