দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন অতি দরিদ্রদের জন্য আত্মকর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আমতলীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগটি আমলে নিয়ে আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন ইউএনও।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের হতদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) দুই প্রকল্পে ৬৬ লাখ ৭২ হাজার টাকায় কাজ দেয়। নীতিমালায় উল্লেখ আছে, দুই প্রকল্পে ১৩৯ জন হতদরিদ্রদের তালিকা করে ওই তালিকার শ্রমিক দিয়ে কাজ করতে হবে এবং শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কাজের টাকা পরিশোধ করবে।
গুলিশাখালী ইউনিয়নের এক বাসিন্দার দেয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয়, চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি নীতিমালা অনুসারণ না করে তার আত্মীয়-স্বজন, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবি ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের তালিকা করে নামমাত্র কাজ করে মোবাইল সিম নিজের কাছে রেখে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
তালিকায় শ্রমিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিলো অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. আলমগীর হোসেনের নাম। জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হতদরিদ্র তালিকায় আমার নাম কেনো থাকবে? আমি এ কাজের বিষয়ে কিছুই জানি না এবং টাকাও উত্তোলন করিনি।
তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কবির প্যাদা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি কাজের বিষয়ে কিছুই জানি না। আর হতদরিদ্র তালিকায় আমার নাম দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি কোনো টাকাও নেইনি।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমি নীতিমালা অনুসারে শ্রমিক দিয়ে সঠিক মতো কাজ করেছি।
জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ জামাল হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ইউএনও স্যার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।