নতুন শিক্ষাক্রমদাখিলের বিশেষায়িত বিষয়ে পাঠদান-পরীক্ষা কীভাবে, জানেন না কেউ

দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে নবম শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হয়েছে। তবে দাখিল পর্যায়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিশেষায়িত বিষয়গুলোতে কী পদ্ধতিতে পাঠদান বা দাখিলের পাবলিক পরীক্ষা নেয়া হবে নির্ধারণ করা হয়নি। দাখিলের বিশেষায়িত বিষয়গুলোর পাঠদান ও এ বিষয়গুলোতে দাখিল পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

গতকাল বুধবার মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অভিন্ন বিষয় বিন্যাস-মূল্যায়ন পদ্ধতি ও ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের নতুন শিক্ষাক্রমের দাখিল পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে এক কর্মশালা এনসিটিবিতে অনুষ্ঠিত হয়। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও এনসিটিবির কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন।

জানা গেছে, আগের কারিকুলামে মাদরাসার দাখিল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা সাধারণ, বিজ্ঞান, মুজাব্বিদ ও হিফজুল কোরআন-এ চারটি বিভাগে পড়াশোনা করতেন। আগের শিক্ষাক্রমে বিভাগ ভেদে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের পাঁচ থেকে আটটি বিশেষায়িত বিষয়ে পড়তে হয়। বিশেষায়িত বিষয়গুলো ছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে অন্যান্য বিষয়ে পাঠদান কীভাবে হবে তা সাধারণ ধারার আদলে নির্ধারিত হয়েছে। তবে বিশেষায়িত বিষয়গুলোর পাঠদান ও দাখিল পরীক্ষা কীভাবে হবে তা এখনো নির্ধারণ করার বিষয়ে ওই কর্মশালায় আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।

 জানতে চাইলে এনসিটিবির শিক্ষাক্রম উইংয়ের সদস্য অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আসলে আমাদের সাধারণ ধারার শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পর্যায়ে যে বিষয়গুলো পড়েন মাদরাসার দাখিলের শিক্ষার্থীরাও সেগুলো পড়েন। তবে সাধারণ ধারার শিক্ষার্থীরা যে একটি ধর্ম বিষয় পড়লেও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বিস্তৃতভাবে কয়েকটি বিষয়ের মাধ্যমে এ বিষয়টি পড়তেন। নতুন শিক্ষাক্রমে নবম শ্রেণির সাধারণ ধারার শিক্ষার্থীদের মতোই মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও মূল্যায়ন হবে। তবে বিশেষায়িত বিষয়ে পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি কীভাবে বা কী উপায়ে হবে তা নিয়েই কর্মশালায় আলোচনা হয়েছে।

 তিনি আরো বলেন, মাদরাসা শিক্ষা ধারায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নিয়ে আমরা আগের একাধিক কর্মশালা করেছি। কিন্তু তখন আমরা তাদের নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি। পরে করোনা মহামারির সময়ের স্থবিরতা ও সে সময়ের সিলেবাস পুনর্বিন্যাস, অ্যাসাইনমেন্ট তৈরিসহ অন্যান্য কাজের চাপে এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়নি। তাই নতুন শিক্ষাক্রমে দাখিল পর্যায়ের পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে।

 তিনি বলেন, কর্মশালায় এ বিষয়গুলোতে পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। আরো কয়েকদফা আলোচনা করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসবো বলে আশা করছি।

 এনসিটিবির এ সদস্য আরো বলেন, বিশেষায়িত বিষয়ের পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি এখনো নির্ধারণ না হওয়ায় বাচ্চাদের পিছিয়ে পরার কোনো সম্ভবনা নেই। কারণ, তারা অন্যান্য নয়টি বিষয়ের জ্ঞান পাবেন। শুধু বিশেষায়িত বিষয়ে কীভাবে কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা মাদরাসাগুলোকে বলেছি, আপাতত বিশেষায়িত বিষয়গুলো আগের মতোই পড়াতে। তবে বিশেষায়িত বিষয়গুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসলে তা মাদরাসাগুলোকে জানিয়ে দেয়া হবে।

জানা গেছে, আগের শিক্ষাক্রমে মাদরাসার সাধারণ, বিজ্ঞান, মুজাব্বিদ ও হিফজুল কোরআন বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিশেষায়িত পাঁচটি অবশ্যিক বিষয়ে পাঠদান করানো হতো। সেগুলো হলো-কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ, হাদিস শরীফ, আরবি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং আকাইদ ও ফিকাহ। দাখিলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওই পাঁচটি আবশ্যিক বিষয়ই পড়তেন। সাধারণ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলামের ইতিহাস আবশ্যিক হিসেবে এবং মানতিক বা উর্দু বা ফার্সি বিষয়ের যেকোনো একটি ঐচ্ছিক হিসেবে পড়তেন। অপরদিকে, মুজাব্বিদ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওই পাঁচটি বিষয়ের সঙ্গে তাজবিদ নসর ও নজম, কিরাআতে তারতিল ও হাদর আবশ্যিক হিসেবে ও মানতিক বা ফার্সি বা উর্দুর যেকোনো একটি ঐচ্ছিক হিসেবে পড়তেন। আর হিফজুল কুরআন বিভাগে শিক্ষার্থীরা ওই পাঁচটি বিষয়ের সঙ্গে তাজবিদ, হিফজুল কুরাআন দাওর অবশ্যিক ও  মানতিক বা ফার্সি বা উর্দুর যেকোনো একটি ঐচ্ছিক হিসেবে পড়তেন। নতুন শিক্ষাক্রমে এ বিশেষায়িত বিষয়গুলোতে কিভাবে পাঠদান ও মূল্যায়ন হবে না নির্ধারণেই আলোচনা চলছে।

 

 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন - dainik shiksha সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ - dainik shiksha শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল - dainik shiksha শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027070045471191