দৈনিক শিক্ষাডটকম, লক্ষ্মীপুর : মোবাইল ফোন দেখে শিক্ষার্থীদের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছেন শিক্ষকেরা। একজন শিক্ষক দরজায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন, আরেকজন শিক্ষক পরীক্ষা কক্ষে শিক্ষার্থীদের উত্তর বলে দিচ্ছেন। আবার কোনো কক্ষে শিক্ষকেরা ব্ল্যাকবোর্ডে উত্তর লিখে দিচ্ছেন।
এমনই দৃশ্য ধরা পড়েছে লক্ষ্মীপুরের বশিকপুর ডি.এস.ইউ. কামিল মাদরাসা পরীক্ষাকেন্দ্রের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে। ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার খবর বৃহস্পতিবার বিকেলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা চলাকালীন নির্ধারিত ৩ ঘণ্টা পরেও পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারির সাধারণ গণিত পরীক্ষা ও গত ৩ মার্চ (রোববার) ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ের পরও পরীক্ষা নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বশিকপুর ডি.এস.ইউ. কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে ১০টি মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছেন। ৮টি কক্ষে পরীক্ষা হলেও সিসিটিভির ক্যামেরা রয়েছে ৩টি কক্ষে। অপর ৫টি কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই, তবে সে কক্ষগুলোতেও একইভাবে অসুদপায় অবলম্বন করে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারির সাধারণ গণিত পরীক্ষার নির্ধারিত সময় পার হলেও দরজা আটকিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। গত রোববার ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা ১.১৫ মিনিটেও পরীক্ষা নিতে দেখা গেছে। অথচ পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার কথা দুপুর ১টায়। এছাড়াও পরীক্ষার্থীদের হাতে হাতে নকল তুলে দিচ্ছেন শিক্ষকরা, এমন দৃশ্যও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা মেলে।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড নীতিমালা অনুযায়ী দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র কমিটিতে ৫ জন সদস্যের কথা থাকলে বশিকপুর ডি.এস.ইউ. কামিল মাদরাসা বোর্ডের নীতিমালাকে উপেক্ষা করে পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল সরবরাহসহ অনিয়মে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হামিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। কোনো কিছু জানতে হলে তার সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসকের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রিয়াংকা দত্ত। তবে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া হবে বলে জানান তিনি।