আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের পরিবহণে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাশ (অর্ধেক) ভাড়া কার্যকরের প্রজ্ঞাপন জারি না হলে ১৫ ডিসেম্বর সারা দেশে অনশন কর্মসূচি পালিত হবে। শনিবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন। হাফ পাশ বাস্তবায়নসহ নয় দফা দাবিতে সড়কে স্বজনহারাদের নিয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে সড়কে নিহত সাইফুল ইসলাম রানার মা বলেন, আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাচ্ছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিচার পাই নাই। আমার ছেলের মতো অনেক মা তার সন্তান হারিয়েছেন। আমার একটি মাত্র ছেলে ছিল। আমরা স্বামী-স্ত্রী উভয়ই বৃদ্ধ। আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে জানি না।
সড়কে নিহত আবদুল করিম রাজীবের সহপাঠী রাব্বি বলেন, রাজীব আমার বন্ধু ছিল। ও মারা যাওয়ার পর রাস্তায় নেমেছিলাম। ওর মা এখনো প্রতিদিন কান্না করে। যার সন্তান মারা যায় সেই বোঝে সন্তান হারানোর কী যন্ত্রণা! এখন যারা রাস্তায় আন্দোলনে নামেন তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আর দেশে বিভিন্ন স্থানে যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করছেন তারা জেলা প্রশাসন ভবনের সামনে অনশন করবেন।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি হলো-বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালে ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই বিধান সংবিধানে সংযোজন করতে হবে; নৌপরিবহণমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে; ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ করতে হবে ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না; বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না; শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে; সড়কে নিহতদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে; শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের তুলতে হবে; শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া কার্যকর করতে হবে।