তুমুল বৃষ্টিতে যমুনা নদীর পানি বেড়ে সৃষ্ট বন্যায় রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ার পর দিল্লির কর্তৃপক্ষ শহরটির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি লোকজনকে বাড়ি থেকে অফিস করার পরামর্শ দিয়েছে। শহরটির সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় রোববার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। জরুরি কাজে নিযুক্ত নন এমন সরকারি কর্মীদের অফিসেও আসতে হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বলেছেন, দিল্লির কিছু কিছু এলাকায় পানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। যমুনার পানি কমা শুরু করলে, যত দ্রুত সম্ভব শোধনাগারগুলো চালু করার চেষ্টা করব আমরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, শুক্রবার দিল্লির সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ইন্দ্রপ্রস্থ মেট্রোস্টেশনের কাছে একটি ড্রেন ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার পর গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে পানি ঢুকে পড়ে। আর এই ড্রেন ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সেনাবাহিনী ও জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন। হরিয়ানার মতো পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে অস্বাভাবিক তুমুল বর্ষণের কারণে দিল্লির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটির পানি ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে। দুই কোটি জনসংখ্যার শহরটিও কয়েকদিন আগে ভারি বৃষ্টিপাত দেখেছে, যাতে জলমগ্ন হয়ে পড়া নিচু এলাকাগুলোর শত শত লোককে বাধ্য হয়ে ত্রাণ শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার যমুনা নদীর পানি এ দফায় সর্বোচ্চ শিখরে উঠতে পারে, এর মধ্যেই বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে হবে, বলেছেন কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, লোকজনের জীবন বাঁচানোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি দিল্লির সব বাসিন্দার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, জরুরি এই মুহূর্তে সম্ভব সব উপায়ে একে অপরকে সহায়তা করুণ।
জুন থেকে শুরু হওয়া এবারের বর্ষা মৌসুমে দিল্লির কাছে অবস্থিত ভারতের উত্তরের রাজ্যগুলো রেকর্ড বৃষ্টিপাত দেখেছে। হিমালয় ও পাঞ্জাব প্রদেশে এই সময়ের গড়ের তুলনায় যথাক্রমে ১০০ ও ৭০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ। দিল্লিতেও গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় ১১২ শতাংশ বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে, বলেছে তারা।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ পদ্ধতিতে কাজ করিয়ে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গত ২৪ জুন থেকে হওয়া প্রবল বৃষ্টি কেবল হিমাচল প্রদেশেই অন্তত ৮৮ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই। তুমুল বৃষ্টিতে পাহাড়ি রাজ্য উত্তরাখণ্ডের অনেক সড়কও ভেসে গেছে বলে বুধবার রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।