দুই শিক্ষকের ডাবল এমপিও

শফিকুল ইসলাম |

তথ্য গোপন করে রাজধানীর কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুটি ইনডেক্স নিয়ে একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে  এমপিওর (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায়  অবৈধ চাকরিকালীন সময়ের উত্তোলিত সরকারি বেতন ভাতাদি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি শর্ত বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ওই কলেজের অধ্যক্ষকেও বলা হয়েছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এ নির্দেশ প্রতিপালন করা না হলে ওই কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে অধিদপ্তর।

জানা গেছে, রাজধানীর কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের  প্রভাষক রোজিনা রশিদ এবং মোঃ তারেক হাসনাতের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে একই সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানে দুটি ইনডেক্স নিয়ে  বিধিবর্হিভূতভাবে এমপিওভুক্ত হয়ে চাকরি করছেন। প্রভাষক রোজিনা রাশিদ আরামবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের মে পর্যন্ত এবং মোঃ তারেক হাসনাত আরামবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০০২ খ্রিস্টাব্দের জুন থেকে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন।

অভিযোগের সত্যতা পায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি।  এ বিষয়ে অধিদপ্তরের  তদন্ত কর্মকর্তা জানান, প্রভাষক রোজিনা রশিদ এবং মোঃ তারেক হাসনাত স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্ত বিধিমালা ১৯৭৯ এর ৩(৩) ধারা পরিপূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্তদের চাকরি থেকে বরখাস্তের সুপারিশ করেন।

তদন্ত কর্মকর্তার মতামত অনুযায়ী দু্ই শিক্ষক রোজিনা রশিদ এবং মোঃ তারেক হাসনাতের অবৈধ চাকরিকালীন সময়ের উত্তোলিত সরকারি বেতন ভাতাদি চালানোর মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমাদানসহ বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি শর্ত বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা  দেয়া হয়। কিন্তু নির্দেশনা অনুযায়ী এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এর প্রেক্ষিতে সোমবার (২৩ এপ্রিল) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ফের কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে নির্দেশ একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয় ১০ কর্মদিবসের মধ্যে এ নির্দেশ প্রতিপালন করা না হলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা মন্তব্য করেন,  বিধিমালা লংঘন করার কারণে কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দর্শনের প্রভাষক রোজিনা রশিদ  এবং পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক মোঃ তারেক হাসনাতের কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বৈধতা থাকে না। এ কারণে তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যায়।

রোজিনা রশিদ অবৈধ চাকরিকালীন সময়ে এমপিও হিসেবে রোকন উদ্দীন মোল্লা গার্লস কলেজ থেকে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের মে মাস পর্যন্ত ৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা এবং কমলাপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের মে থেকে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৯৩৭ টাকাসহ মোট ১৪ লাখ ২৯৯ টাকা চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ফেরত নেয়া যায়।

মোঃ তারেক হাসনাতের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, তিনি আরামবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০২ খ্রিস্টাব্দের জুন থেক ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর পর্যন্ত ৯৮ হাজার ২২৩ টাকা এবং কমলাপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের মে থেকে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ লাখ ২৩ হাজার ৬২৫ টাকাস মোট ১১ লাখ ২১ হাজার ৮৪৮ টাকা চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ফেরত নেয়া যায়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044848918914795