নীলফামারীর জলঢাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাদের বদলির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন অভিভাবকরা। বুধবার সকালে উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের সিদ্বেশ্বরী জেলে ও কামার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অভিভাবকদের আয়োজনে প্রায় ঘন্টাব্যাপী এ মানব্বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোন্তাকেম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌসি চৌধুরীকে অন্য স্কুলে বদলি করার দাবি জানান।
যদিও শিক্ষকরা বলছেন, কমিটির দাতা সদস্যকে বরাদ্দের টাকার ভাগ না দেয়ায় তিনি অভিভাবকদের দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এদিকে দাতা সদস্য অভিভাবকদের মানববন্ধনের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন।
মানববন্ধনে অভিভাবকরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে অনিয়মিত যাতায়াত করে আসছেন প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোন্তাকেম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌসি চৌধুরী। স্কুলে ঠিকমত পাঠদান হয় না। এ জন্য ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ায় অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তাদের অনিয়মিত যাতায়াতের বিষয়ে কথা বলায় তাদের গালাগালি ও বিভিন্ন মামলা দেয়ার ভয়ভীতি দেখান এ দুই শিক্ষক।
এসময় তারা আরো অভিযোগ করেন, গত কয়েক দিন আগে স্কুলের ১০-১২ জন অভিভাবকের নামে মিথ্যা মামলা করেছেন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকা।
অভিভাবক কামরুজ্জামান, আব্দুল রাশেদ ও মহেসিন আলী বলেন, গত ৯ আগস্ট প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, অসাধচারণের অভিযোগ জানিয়ে তাদের অন্য স্কুলে বদলির দাবিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিভাবকদের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও সে অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাদের দুজনের বদলি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ছেলে-মেয়েদের এই স্কুলে পড়ালেখা করাবো না।
বুধবার সিদ্বেশ্বরী জেলে ও কামার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোট ৯৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে সিদ্বেশ্বরী জেলে ও কামার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোন্তাকেম চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মতিউর রহমান স্কুলের বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দের টাকা থেকে ভাগ চেয়েছিলেন, আমি তাকে না দেয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছেন।
বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মতিউর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এবং মানববন্ধন সবকিছু অভিভাবকরাই করেছেন। এখানে আমার কোনো হাত নেই। স্কুলে সরকারি বরাদ্দ থেকে ভাগ চাওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোশফেকুর রহমান বলেন, দ্রুত একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।