দুর্নীতির দায়ে প্রধান শিক্ষিকার বেতন বৃদ্ধি স্থগিত

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অপরাধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালায় দোষী সাব্যস্ত হন পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের হিলচিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা বেগম। পরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে ফেরদৌস আরা বেগমের বেতন বৃদ্ধি আগামী এক বছরের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক ড. শফিকুল ইসলাম।  

৪ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা যায়, হিলচিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা বেগমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত অপরাধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুযায়ী অভিযুক্ত করে গত ১ আগস্ট বিভাগীয় মামলা দায়ের করে জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষিকা গত ৮ আগস্ট লিখিত জবাব দাখিল করেন এবং তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করেন বিধায় ২৭ আগস্ট তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা দাখিল করা জবাব ব্যক্তিগত শুনানির বক্তব্য, বিভাগীয় মামলার প্রাসঙ্গিক রেকর্ডপত্র ও সার্বিক বিষয় পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এজন্য সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা উপবিধি অনুযায়ী ‘লঘুদণ্ড’ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 

ফেরদৌস আরা বেগমকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর উপবিধি মোতাবেক ১টি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি এক বছরের জন্য স্থগিত করে ‘লঘুদণ্ড’ প্রদান করা হয়। তবে স্থগিত বেতন পরবর্তীতে তিনি বকেয়া হিসেবে প্রাপ্য হবেন না। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।

এর আগে প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা বেগমের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিনকে প্রধান করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে গত ১ আগস্ট বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম এর দপ্তরে এই বিভাগীয় মামলা করা হয়।

পরে মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে তাকে ব্যক্তিগত শুনানী করার সুযোগ দেয়া হয়।

পটিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, প্রধাক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের তদন্তে সত্যতা পেয়েছি। আমাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক লঘুদন্ড প্রদান করেছেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ পরবর্তী তদন্ত প্রতিবেদনের পর বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। মামলার শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা অনুযায়ী তার ১টি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ১ বছরের জন্য স্থগিত করে লঘুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্থগিত হওয়া বেতন পরবর্তীতে তিনি বকেয়া হিসেবে প্রাপ্য হবেন না।  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! - dainik shiksha দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান - dainik shiksha বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক - dainik shiksha বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ - dainik shiksha ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল - dainik shiksha ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003262996673584