বগুড়ায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী মোহন মিয়া (১৮)। তার সঙ্গী আরও দুই পরীক্ষার্থী বাপ্পী হাসান ও লিখন আহম্মেদকেও মারধর করেছে তারা। গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের খান্দার এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত মোহন মিয়া শহরের ফুলতলা এলাকার শুকুর আলীর ছেলে। বগুড়া সরকারি কলেজের এই শিক্ষার্থীর আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২ ডিসেম্বর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। আহত বাপ্পী হাসান বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট কারিগরি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র বাপ্পী হাসান জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ী শিবলীকে রানীরহাট এলাকা থেকে বাড়িতে নামিয়ে দিতে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের খান্দার এলাকায় গিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে আরও দুটি মোটরসাইকেল ছিল। মোটরসাইকেলে তার সঙ্গে ছিলেন বগুড়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী মোহন মিয়া ও কাহালু ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী লিখন আহম্মেদ।
বাপ্পী জানান, শিবলী ভাইকে খান্দার এলাকায় নামিয়ে দিয়ে ফুলতলার দিকে ফেরার সময় একদল লোক তাদের ধাওয়া করে। তখন তারা ধাওয়াকারীদের খোঁজ করতে যান। এ সময় খান্দার এলাকার শেহা প্যালেসের সামনে একদল লোক আমাদের পথরোধ করে লাঠি দিয়ে পেটায়। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে পড়ে গেলে তারা মোহন মিয়াকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।
বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, আহত মোহন মিয়াকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর আনুমানিক রাত ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে জড়িতদের শনাক্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
নিহত মোহন মিয়ার প্রতিবেশী শহরের ফুলতলা এলাকার ফারুক হোসেন জানান, ছোট্ট ছেলে মোহনকে কেন, কারা খুন করেছে, তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না। তিনি বলেন, 'মোহনের বাবা শুকুর আলী শহরের ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ডে একটি পরিবহন সংস্থার কাউন্টারে কাজ করেন। শুকুর আলীর ৫ ছেলে এবং ২ মেয়ের মধ্যে মোহন সবার ছোট।'
বগুড়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূর নবী জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রবেশপত্র তুলতে মোহন মিয়া ২৯ নভেম্বর কলেজে এসেছিল। আজ (মঙ্গলবার) সকালে কলেজে এসে শুনছি যে, ছেলেটা খুন হয়েছে। শুনে খুবই খারাপ লাগছে।