দেবাশীষের মৃত্যু অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে

একেএম শাহনাওয়াজ |

যেসব সচেতন মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান চালচিত্র দেখে ও শুনে বিষণ্ণবোধ করেন, তারা যদি আমাদের মতো ভেতরটা গভীরভাবে দেখতে পেতেন তবে হতাশায় নিমজ্জিত হতেন। আসলে এ অঞ্চলে যা ঘটছে তা বিপন্ন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যকে।


 বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞানসৃষ্টির সাধন কেন্দ্র, সেখানে নানা অনাচার নিষ্প্রভ করে দিচ্ছে সবকিছু। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক ধারণার বিপরীতে চলছে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় মুক্তচিন্তা চর্চার সূতিকাগার। এখানে চলবে জ্ঞানচর্চা এবং এর শক্তিতে সৃষ্টি হবে নতুন নতুন জ্ঞান। তাই বিশ্বের নানা অঞ্চলে নতুন নতুন আবিষ্কার ও উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদেরই কৃতিত্ব দেখা যায়। পাশে থাকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশের গুণী অধ্যাপকদের নাম যে শোনা যায় না তেমন নয়। তবে অধিকাংশই যখন দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন এবং গুণের স্বীকৃতি পান, তখন প্রতিভার পরিচয় মেলে। আজ এমন এক বিপর্যস্ত অবস্থায় এসে আমরা দাঁড়িয়েছি যে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব রেটিংয়ের তলানিতেও যেন জায়গা করে নিতে পারছে না। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কথা বাদ দিলেও জাতীয় প্রয়োজনে যে মেধাবী জনশক্তি তৈরি হবে, সেই ভরসাও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে করা যাচ্ছে না।

এরপরও যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মেধাবী ও সৃজনশীল ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকের অবস্থান নেই তেমন নয়। কিন্তু তাদের পরিমার্জন করবে কে? তারা প্রণোদনা পাবেন কোথা থেকে? দলমতের ঊর্ধ্বে ওঠে প্রতিভাবান গুণীকে কি সম্মান দেয়া হয় এ সমাজে? রাজনীতিকরণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন মুক্তচিন্তার মেধাবী শিক্ষক ও শিক্ষার্থী কোণঠাসা হয়ে আছেন। আর দাবড়ে বেড়াচ্ছেন রাজনৈতিক লেবাসধারীরা। জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞানসৃষ্টির সুসংবাদ তেমন না পাওয়া গেলেও নানা অপকীর্তির খবর গণমাধ্যমে পাওয়া যায়।

এতে ধীরে ধীরে ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান। এমন বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষার কাঠামো বজায় থাকার কথা নয়। অপরাজনীতির অন্ধকার বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রকদের যেভাবে কলুষিত করছে, এর সাম্প্রতিক মর্মান্তিক ঘটনা পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র দেবাশীষ মণ্ডলের আত্মহত্যা।

পত্রিকার সংবাদে যেটুকু জানা গেছে, এর সারসংক্ষেপ হচ্ছে- ভালো ফল করা দেবাশীষের স্বপ্ন ছিল নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার। লক্ষ্যপূরণের কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। শুধু ফলই ভালো করেছেন তা নয়, গবেষণায়ও যুক্ত ছিলেন। মেধাবী ও অনুসন্ধিৎসু ছাত্রছাত্রীদের গবেষক শিক্ষকরা নিজ গবেষণায় ব্যক্তিগতভাবে সহকারী হিসেবে যুক্ত করে নেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029659271240234