একটি জাতি জ্ঞান-বিজ্ঞানে কতটুকু এগিয়ে, সে দেশে গবেষণার মান কী, দেশে উচ্চশিক্ষার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কী, তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকালে বোঝা যায়। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি।
সারা বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায়, বিজ্ঞানের যত বড় বড় আবিষ্কার তার বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে হয়েছে। তাই শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড হলে বিশ্ববিদ্যালয় হল একটি জাতির মস্তিষ্ক।
একজন অধ্যাপকের দায়িত্ব শিক্ষাদান ও গবেষণা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মানসম্মত গবেষণা জার্নালে পর্যাপ্তসংখ্যক প্রকাশনাকে গুরুত্বসহ বিবেচনা করা হয়।
কথিত আছে, অযোগ্যদের নিয়োগের কারণে শিক্ষার মান দিন দিন কমছে; পিএইচডি ছাড়াই অনেক শিক্ষক অধ্যাপক হচ্ছেন; শিক্ষকরা গবেষণার চেয়ে রাজনীতির দিকে বেশি ঝুঁকছেন। এতে পারস্পরিক কোন্দল দিন দিন বাড়ছে। অন্যদিকে, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্ক এখন আর আগের জায়গায় নেই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জাতির মস্তিষ্কের এই বেহাল দশার কারণ কী? উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটু তুলনা করলে আসল কারণটি বেরিয়ে আসবে।
উত্তর আমেরিকার বিখ্যাত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়েছে আমার। একটি বিশ্ববিদ্যালয় একজন এমএ বা পিএইচডি শিক্ষার্থীর পেছনে যে পরিমাণে অর্থ ব্যয় করে, আমরা একজন শিক্ষকের পেছনেও সে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে পারি না।
আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি তাতে আছে কয়েকটি লাইব্রেরি; একটার সঙ্গে অন্য লাইব্রেরি ইন্টারকানেক্টেড; ফলে যে কোনো লাইব্রেরি থেকে বই ধার কিংবা জমা দেয়া যায়; এক লাইব্রেরি থেকে ধার নেয়া বই অন্য একটিতে ফেরত দেয়া যায়; যত খুশি বই ধার করা যায়; ঘরে বসে অনলাইনে বই রিনিউ করা যায়; কোনো বইয়ের কপি না থাকলে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বই ধার করে আনা যায়; মুহূর্তের মধ্যে ইন্সটিটিউশনাল আইডি ব্যবহার করে যে কোনো জার্নালে প্রকাশিত পেপার ডাউনলোড করা যায়।
গবেষণাকে উৎসাহিত করার জন্য কোনো কনফারেন্সে পেপার একসেপ্টেড হলে বিশ্ববিদ্যালয় তার টিএ-ডিএ বহন করে থাকে। ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টাতে গ্রাজুয়েট অ্যাসোসিয়েশন থেকে বছরে কনফারেন্সে যোগদানের জন্য সর্বোচ্চ দুই হাজার ডলার পর্যন্ত পাওয়া যায়। আবার ফ্যাকাল্টি অফ গ্রাজুয়েট স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ থেকে আলাদাভাবে টিএ-ডিএ দেয়ার ব্যবস্থা আছে।
স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থীরা কনফারেন্সে পেপার সাবমিট করতে উৎসাহিত হন। কনফারেন্সে পেপার সাবমিট করার সুবিধা এই যে, সেখান থেকে কমেন্ট আসে, যা পেপারের মান উন্নয়নে সহায়তা করে।
আর শিক্ষকতার ক্ষেত্রে সাধারণত সর্বনিম্ন সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেয়া হয়, যার অন্যতম পূর্বশর্ত হল পিএইচডি ডিগ্রি। অধ্যাপকরা সাধারণত বছরে এক সেমিস্টার পড়ান এবং বছরের বাকি সময়টা গবেষণার কাজে ব্যয় করেন, কনফারেন্সে পেপার প্রেজেন্ট করতে বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ান।
এছাড়া আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলে সুপার সেকশনগুলোর ক্ষেত্রে প্রফেসরের ওয়ার্কলোড কমানোর জন্য আছে টিএ (টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট) নিয়োগের ব্যবস্থা। ফলে সুপার সেকশনে ক্লাস নিলে একজন প্রফেসরকে খাতা দেখার বাড়তি চাপ নিতে হয় না।
তাছাড়া ছাত্রদের ই-মেইলের রিপ্লাই দেয়া, কোর্স সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ইত্যাদির বেশিরভাগই টিএ করে থাকেন। সুতরাং একজন অধ্যাপক তার নিজের গবেষণার কাজে সময় দিতে পারেন।
অন্যদিকে, আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রবেশের সর্বনিম্ন ধাপ লেকচারার পদ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করা মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়।
একজন লেকচারার সক্রিয় চাকরির অভিজ্ঞতা এবং প্রয়োজনীয়সংখ্যক প্রকাশনা দিয়ে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক হতে পারেন। এক্ষেত্রে পিএইচডি তার পদোন্নতির জন্য সহায়ক মাত্র (পিএইচডি থাকলে অপেক্ষাকৃত কম সময়ে পদোন্নতি পাওয়া যায়), আবশ্যক নয়।
অন্যান্য সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে দেখা যায় কর্মকর্তাদের জন্য ফাউন্ডেশন ট্রেনিং করা বাধ্যতামূলক, দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে তাদের জন্য আছে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের সুযোগ, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জন্য আছে উচ্চশিক্ষায় ফেলোশিপের ব্যবস্থা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য আছে পিটিআই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য আছে বিএড, এমএড ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা।
অথচ একজন লেকচারারের মানোন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো ডিগ্রির আবশ্যকতার কথা উল্লেখ নেই, ব্যবস্থা নেই কোনো সহজ সুযোগের।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪২। এই ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। প্রতি বছর ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষকের মধ্য থেকে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য ইউজিসি পিএইচডি ফেলোশিপ পান মাত্র ২০ জন শিক্ষক।
মন্ত্রণালয়ের অনেক বৃত্তিতে শিক্ষকরা আবেদন করতে পারেন না। দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষকদের উচ্চশিক্ষার জন্য নিজস্ব ফান্ড নেই।
কাজেই একজন তরুণ শিক্ষককে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমাতে হলে তিনটি পথের যে কোনো একটি বেছে নিতে হয় : ১. বাবা-মায়ের রেখে যাওয়া অর্থ ব্যবহার বা সম্পত্তি বিক্রি; ২. সংসার, মানে স্বামী বা স্ত্রী, ছেলেমেয়ের ভরণপোষণ, মা, বাবা, ছোট ভাইবোনের দায়িত্ব যদি থেকে থাকে সব পালন করার পর বাজারের আলু-পটলের দরকষাকষি করে, মাঝে মাঝে নিজেদের শখের মুখে লাগাম দিয়ে কয়েক বছরের অতি কষ্টে সঞ্চিত অর্থ ব্যয়; এবং সে ব্যবস্থা না থাকলে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার করে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো; ৩. বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত আর্থিক সাহায্য যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আসে টিএ (টিচিং এসিস্টেন্ট) বা আরএ (রিসার্চ এসিস্টেন্ট) হিসেবে নিয়োগের মাধ্যমে।
অর্থাৎ উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে হলে একজন শিক্ষককে হয় ঋণের বোঝা মাথায় নিতে হয়, অথবা বাবার ভিটেমাটি বিক্রি করতে হয়, অথবা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দয়ার ওপর নির্ভর করতে হয়- সারা বিশ্বের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে একটা ফান্ড ম্যানেজ করতে হয়।
আবার যারা পিএইচডি কিংবা মাস্টার্সের জন্য ফান্ড পান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই ফান্ডের পরিমাণ এত স্বল্প থাকে যে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনো রকমে টেনেটুনে জীবন অতিবাহিত করা যায়।
ফলে বাধ্য হয়ে তাদের পার্টটাইম চাকরি খুঁজতে হয়; এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই চাকরিগুলো হয় স্টার বাকস কিংবা ম্যাগডোনাল্ডসের মতো ব্যস্ততম রেস্টুরেন্টে, যেখানে এক মিনিট বিশ্রামের কোনো সুযোগ নেই।
অন্যদিকে, ওইসব দেশের পড়াশোনার মান এমন যে, নিজের ব্যক্তিগত কাজের অজুহাতে কখনই তারা শিক্ষার মানের সঙ্গে আপস করেন না। অনেক সময়ই জিপিএ নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে না হলে ফান্ড বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে ফান্ড যাতে বন্ধ না হয় সেই চাপ মাথায় নিয়ে ছুটির দিনগুলোতে টিএ’র কাজ, মানে ক্লাস নেয়া, খাতা দেখা, অফিস আওয়ার মেন্টেইন করা, নিজের গবেষণার কাজ করা, পড়াশোনা, আর উইকেন্ডে পার্টটাইম কাজ করা- এভাবেই কাটে তাদের সময়।
উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন যেন একজন শিক্ষকের একান্তই নিজস্ব দায়িত্ব- যারা নিজস্ব চেষ্টায় নিজেদের মেধা আর মননের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন; সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ডিগ্রি অর্জন করে দেশকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
এখন কথা হচ্ছে, এত কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে বিদেশে ডিগ্রি করার পুরস্কার কী? অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই এর পুরস্কার হল অ্যাক্টিভ সার্ভিস হারানো। শিক্ষক যে বিদেশে টিএ হিসেবে কাজ করেছেন, বা আরএ হিসেবে গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তার কোনো কিছুই অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় চাকরি হিসেবে গণ্য করা হয় না। নতুন পে-স্কেল দেয়ার আগে একটা পুরস্কার শিক্ষকদের জন্য ছিল, আর তা হল একজন শিক্ষক বিদেশ থেকে ডিগ্রি করে এসে যোগদান করলে দুটি ইনক্রিমেন্ট পেতেন।
এখন নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী সেটাও বন্ধ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষকরা বিদেশে উচ্চশিক্ষার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। অন্যদিকে, কনফারেন্সে যোগদানের জন্য যে বরাদ্দ তা খুবই অপ্রতুল; এবং ব্যক্তিগত খরচে বিদেশে পেপার প্রেজেন্ট করা বেশিরভাগ শিক্ষকের পক্ষেই অসম্ভব। আর দেশে বসে যে গবেষণা করবে তার কি পর্যাপ্ত সুবিধা আছে?
একটা ভালো মানের লাইব্রেরি, গবেষণা জার্নালের সাবস্ক্রাইবার হওয়া, ওয়েবসাইটগুলোতে লগইন করা এসবই বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধ্যের বাইরে। আমরা বিভাগের উন্নয়ন চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন চাই। অথচ শিক্ষকের কিভাবে উন্নয়ন হবে সেটা একবারও চিন্তা করি না।
বিভাগের উন্নয়ন কিংবা শিক্ষার উন্নয়ন কি তবে কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ? শিক্ষক যদি না পড়েন, পড়াবেন কী করে?
গতকাল যে পেপার প্রকাশিত হয়েছে সেটি সম্পর্কে যদি শিক্ষকের জ্ঞান না থাকে এবং তার নিজের পর্যবেক্ষণ যদি বিশ্বকে জানাতে না পারেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়, বিশ্বমানের শিক্ষা হয়ে ওঠে না; সেক্ষেত্রে একটি কলেজের সঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর পার্থক্য থাকে না।
প্রথমেই বলেছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতির মস্তিষ্ক। একজন ব্যক্তির মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে তার বেঁচে থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। একইভাবে, উচ্চশিক্ষা ধ্বংস হলে একটি জাতির ভারসাম্য নষ্ট হতে বাধ্য।
কিভাবে? যদি এ অবস্থা চলতে থাকে মানে শিক্ষকদের উচ্চশিক্ষার জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ না দেয়া হয় এবং তাদের জন্য উচ্চশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক না করা হয়, যদি গবেষণা খাতে অর্থের বরাদ্দ না বাড়ানো হয়, তাহলে ধীরে ধীরে শিক্ষকরা ব্যক্তিগত খরচে বিদেশে উচ্চশিক্ষার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
সেক্ষেত্রে ডিগ্রি ছাড়া প্রফেসরের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। শিক্ষার মান ধীরে ধীরে নিম্নগামী হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ক্লাসরুমের শিক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়া কিংবা জিপিএ-৪ পাওয়া ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশায় আসার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেবে। স্বভাবতই দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট নিয়ে বের হয়ে তার স্বপ্ন থাকবে সর্বোচ্চ পদমর্যাদার পেশায় যোগদান করার।
ভালো শিক্ষকের অভাবে ভালো গ্রাজুয়েট বের হবে না; জাতি একজন ভালো অফিসার খুঁজে পাবে না; খুঁজে পাবে না একজন ভালো কৃষিবিদ, একজন ভালো বিজ্ঞানী, একজন ভালো কর্পোরেট অফিসার, একজন ভালো সাংবাদিক, একজন ভালো শিক্ষাবিদ, একজন ভালো প্রকৌশলী।
তাহলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী? শিক্ষকদের গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো, বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা, সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান কিংবা পদোন্নতির জন্য পিএইচডি বাধ্যতামূলক করা এবং শিক্ষকের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সব আর্থিক ব্যয় রাষ্ট্র কিংবা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বহনের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানের লাইব্রেরির ব্যবস্থা করা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে লাইব্রেরি পরিচালনা এবং ফলাফল প্রদানের ব্যবস্থা করা।
যদি এগুলো কার্যকর করা সম্ভব হয়, তবে একদিকে যেমন মেধাবীরা এই চাকরিতে যোগদানের সুযোগ পাবেন; অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জনকারী মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশাকে প্রাধান্য দেবেন। ফলে অযোগ্য প্রার্থী নিয়োগ পুরোপুরি বন্ধ হবে, শিক্ষকরা প্রতিযোগিতা করবেন স্বক্ষেত্রে উৎকর্ষ সাধনের। বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন মেধা ও মনন চর্চার প্রতিযোগিতা বাড়বে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়