দেশে গণতন্ত্রের অভাব কোথায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

একটি মহল লোভ আর ব্যক্তিস্বার্থে দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ধ্বংস করতে চায় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এখানে (দেশে) গণতন্ত্রের অভাবটা কোথায়? নাকি যারা এ কথা বলেন, তাদের ভালো লাগে যখন জরুরি অবস্থার সরকার হয়! সামরিক শাসক এলে তাদের একটু কদর বাড়ে! এজন্যই তারা খোশামোদি-তোষামোদি করেন। ওইটুকু পাওয়ার লোভে, ব্যক্তিস্বার্থের জন্য তারা দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটাই ধ্বংস করতে চান।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আগামী ২৪ ডিসেম্বর দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে আয়োজিত এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সারাদেশ থেকে দলের জাতীয় কমিটির সদস্যরা যোগ দেন।

শেখ হাসিনা ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে’ তৎপর দেশের কিছু বুদ্ধিজীবীর সমালোচনা করে বলেন, দেশে কিছু মানুষ আছেন, যারা নিজেরে বুদ্ধিজীবী ও জ্ঞানী-গুণী বলে পরিচয় দেন। তাদের মুখেও শুনি- দেশে নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে! মিলিটারি ডিক্টেটরদের সময় যারা মার্শাল ল দিয়ে দেশ চালিয়েছিল, সেটাকেই কী তারা গণতন্ত্র বলতে চান? ওটাই কি তাদের গণতান্ত্রিক ধারা ছিল?

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, জনগণের শক্তিটাই বড় শক্তি। তাদের বিশ্বাস ও আস্থাটাই বড় শক্তি। 

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, যাদের জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে, ক্ষমতা দখল করে আর মার্শাল ল’র মধ্যদিয়ে- তারাই আবার আমারে গণতন্ত্রের ছবক দেয়, পরামর্শ দেয়। তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে! মার্শাল ল দিয়ে, সারারাত কারফিউ দিয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, তারা দেশবাসীকে কীভাবে গণতন্ত্র দেয়? আর কিসের গণতন্ত্র দেয়- সেটা আমি বুঝি না।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলের বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। আর সেটা করতে গিয়ে অবৈধ মিলিটারি ডিক্টেটর সেনাবাহিনীর বহু মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, হাজার হাজার সৈনিককে হত্যা করা হয়। বিমানবাহিনীর সদস্যদের হত্যা করা হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সে সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করে। তাদের গ্রেপ্তার করে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর কারাগারে নিক্ষেপ করে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতায় বসে একটা দলও গঠন করে ফেলে। মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।

শেখ হাসিনার সূচনা বক্তব্যের পর তাঁর সভাপতিত্বে জাতীয় কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। এ সময় জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি সংক্রান্ত আলোচনার পাশাপাশি দলের জাতীয় বাজেট অনুমোদন করা হয়। কাউন্সিলে পাস করানোর জন্য দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের সংশোধনীর খসড়া নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ সমসাময়িক রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় কমিটির নেতারা।

দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সব সদস্যই জাতীয় কমিটিরও সদস্য। দলের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার প্রতিটি থেকে একজন করে প্রতিনিধি এই কমিটির সদস্য। এর বাইরে দলীয় সভাপতি ২১ জন সদস্যকে মনোনীত করেন। সবমিলিয়ে জাতীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৮০ জন। বছরে কমপক্ষে একবার করে জাতীয় কমিটির বৈঠক করার কথা বলা হয়েছে দলীয় গঠনতন্ত্রে। তবে দলীয় সভাপতি চাইলে একাধিকও করতে পারেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ - dainik shiksha গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য - dainik shiksha হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048408508300781