শুধু অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন নয়, এখন বাংলাদেশে ১১ থেকে ৪৫ বছর বয়সির মধ্যে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে এ হার ছিল ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত ১৩ বছরে এই হার বেড়েছে ১৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে বর্তমানে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ১০ এবং নারীদের ৭৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাক্ষরতার ক্ষেত্রে ব্যাপক গুণগত পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রায়োগিক সাক্ষরতা নিরূপণ জরিপ ২০২৩-এর ফলাফলে এসব তথ্য জানা গেছে। আজ সোমবার বিবিএসে প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
বিবিএস’র মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বহু বছর ধরে শুধু সাক্ষরতা নিরূপণের ক্ষেত্রে যারা লিখতে ও পড়তে পারতেন তাদের সাক্ষর হিসাবে গণ্য করা হতো। কিন্তু প্রায়োগিক সাক্ষরতায়-লেখা ও পড়তে পারার পাশাপাশি আরও দুটি বিষয় যোগ হয়। যেমন সাধারণ জ্ঞান বা নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি দেখে বলতে পারবে জাতীয় ও বিশ্বকবি ইত্যাদি। এ ছাড়া কিছু অঙ্ক কষতে জানতে হবে। যেমন-যোগ ও বিয়োগ করা শিখলে সব মিলিয়ে তাদের প্রায়োগিক সাক্ষর মানুষ বলা যায়। এক কথায় বলতে গেলে, যে সাক্ষরতা বাস্তব জীবনের প্রয়োগ করা যায় সেটাই প্রায়োগিক সাক্ষরতা। বিবিএস সূত্র জানায়, প্রায়োগিক সাক্ষরতা নিরূপণে এ জরিপটি ব্যতিক্রম। কারণ এর মাধ্যমে সাক্ষরতার হার যাচাইয়ে নির্বাচিত প্রত্যেক ব্যক্তির ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ন্যূনতম ৫০ নম্বর পেলে প্রায়োগিক সাক্ষর বলে ধরা হয়। ৭-১৫ বছর এবং ১৫ থেকে তদূর্ধ্ব-এ দুটি বয়সের ক্যাটাগরিতে আলাদা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে জরিপ করা হয়েছে। জপির পরিচালনা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে গত জুন মাস পর্যন্ত। দেশের ৬৫ জেলার চার হাজার ৯৬টি প্রাইমারি স্যাম্পল এরিয়া বা পিএসইউ থেকে ৮১ হাজার ৯২০টি পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতি পিএসইউতে ২০টি করে খানা বা পরিবার ধরা হয়েছে। এ কাজে গণনাকারী ছিলেন এক হাজার ২৪ জন। এর আগে ২০০৮ এবং ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে দুটি জরিপ করা হয়েছিল।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের জরিপ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সাত বছর থেকে ওপরের বয়সিদের প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৬৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং নারীর হার ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। পল্লী এলাকায় এ হার ৫৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৫৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং নারী ৫৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শহর এলাকায় প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৯৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং নারী ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ।
জানা যায়, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি ও জরিপ চালানোর জন্য বছরের পর বছর বিদেশ থেকে কোটি কোটি ডলার এনেছে শিক্ষা বিষয়ক এনজিওগুলো। কিন্তু তারা কি উন্নতি করেছে তার হিসেব দিতে পারেনি। কাজের হিসাব চাইলে তারা গোঁজামিল দেয়। কয়েকটি এনজির মালিক নিজেদের শিক্ষাবিদ হিসেবে প্রচার করে আসছে । আর বুঝে না বুঝে কতিপয় নামধারী সাংবাদিক তাদের মতামত প্রচার করে যাচ্ছে।