চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অবাধে চলছে নকল। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে দেয়াল টপকে পরীক্ষার্থীদের কক্ষে নকল দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। যদিও প্রশাসনের দাবি নকল মুক্তভাবে এ বছর সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। কেন্দ্র এলাকায় ভিড় করে নকলের কাগজপত্র নিয়ে ছোটাছুটি করছেন অভিভাবকসহ অনেকেই।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, চিলমারীতে তিনটি কেন্দ্রে চলমান এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চিলমারীর থানাহাট এইউ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দুটি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা এবং মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের আওতায় রাজারভিটা ইসলামিয় ফাজিল মাদরাসায় দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত কয়েকদিনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় দেখা গেছে, কেন্দ্রের আশপাশে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা দেখা গেছে। কেন্দ্র এরিয়ার ভেতরে দেয়াল টপকে ঢুকে নকল সাপ্লাই দিতেও দ্বিধা নেই তাদের। পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টাখানেক পর থেকে শুরু হয় নকল কক্ষে পৌঁছে দেয়ার প্রতিযোগিতা। এদিক সেদিক থেকে বইয়ের পাতা বা সাদা কাগজে হাতে লেখা নকল দেয়াল টপকে জানালা দিয়ে পরীক্ষার্থীদের পাঠাচ্ছেন অভিভাবকরা।
সরেজমিনে পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে গেলে দেখা যায়, ওঠতি বয়সের ছেলেরা কেন্দ্রের পাশে বসে বই থেকে লিখে নকল দেয়াল টপকে কেন্দ্রে ভেতর সরাসরি দিয়ে আসছেন। শুরুর দিন থেকে এমন অবস্থা। তারা কেন্দ্রগুলো কাছাকাছি অবস্থান করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় জটলা করেও থাকতে দেখা গেছে। প্রশাসনের পর্যাপ্ত লোকজন না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে ধারণা অনেকের।
থানাহাট ইউনিয়নের সচেতন নাগারিকরা বলছেন, কেন্দ্র এলাকায় পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। যে পরিবেশে পরীক্ষা হচ্ছে এতে বোঝা যাচ্ছে পড়ালেখার মান অনেক খারাপ অবস্থানে চলে গেছে। এখানে বহিরাগত ছেলেদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও নকল কক্ষে পৌঁছে দিতে ওঠে পড়ে লেগেছে। প্রশাসনের দায়সারা ভূমিকায় চলছে পরীক্ষা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গেলে কয়েকবারের তুলনায় এ বছর পরীক্ষায় নকল অনেক বেশি বেড়ে গেছে। আমরা যে সময় পরীক্ষা দিয়েছি সেসময় এতো নকল ছিলো না। এখন দেখছি বাবা-মাও পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করছে এটা সত্যিই দুঃখজনক।
চিলমারী মডেল থানার পুলিশ পরির্দশক (ওসি তদন্ত) মুশাহেদ খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে ৩জন করে তিনটি কেন্দ্রে মোট ৯জন পুলিশ সদস্যকে মোতায়ন করা হয়েছে। আমাদের দিক থেকে আমরা নজরদারি চালাচ্ছি। এমন পরিবেশ তৈরি হলে প্রয়োজনে আরো পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এবার নকলমুক্ত পরীক্ষা হচ্ছে। আমরা প্রশাসন সর্বোচ্চ অবস্থানে আছি। অসাধুপায় অবলম্বন করার সুযোগ নেই। তবে, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কক্ষে নকল পৌঁছে দেয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারেননি ইউএনও।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।