ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু না করে প্রাথমিক সমাপনী বন্ধের বিপক্ষে এন আই খান

শাহনেওয়াজ সুমন : |

পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষাকে পরীক্ষা না বলে মূল্যায়ন বললে ভালো হয় এবং সে ক্ষেত্রে কিছু গুণগত পরিবর্তন দরকার। সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে সাজসাজ রব থাকা ঠিক নয়। আবার পরীক্ষাই যদি না থাকে তবে প্রতিযোগীতার মনোভাব কমে যাবে। পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ওপর অতি উৎসাহী শিক্ষক ও অভিভাবকদের অযথা চাপ সৃষ্টি, নোট-গাইড কোম্পানি বাড়াবাড়ি, প্রশ্নফাঁস ইত্যাদি বিষয় প্রতিরোধ করতে না পেরে পরীক্ষাটাই বন্ধ করে দেয়া ঠিক নয়।

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিল বিষয়ে দৈনিকশিক্ষাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মঙ্গলবার (২১জুন) শিক্ষা সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ মো. নজরুল ইসলাম খান এমন মন্তব্য করেন।

সাবেক শিক্ষাসচিব এন আই খান বলেন, শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করলে সবচেয়ে ভালো। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন বা প্রতিটি বিষয় পড়ানোর পর মূল্যায়ন করা হলে দুর্বলতা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া যায়। নানা কারণে আমাদের শিক্ষকরা ধারাবাহিক মূল্যায়ন করেন না বা করতে পারেন না তাই বছর শেষে মূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু এই মূল্যায়নে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষনিক কোন ফিডব্যাক দেয়া যায় না।

কেন পরীক্ষা নেয়া হয়? তার উত্তর একেক জনের জন্য একেক রকম : শিক্ষকের জন্য বলতে হবে শিক্ষার্থী কতটুকু শিখছে, কোথায় সবল, কোথায় দুর্বল তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর শিক্ষা প্রশাসনের জন্য বলতে হলে- কোন স্কুল, কোন উপজেলা, কোন জেলা কী করছে তা জানা; জেনে সে অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

আগেকার উদাহরণ টেনে ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক  এন আই খান বলেন, পিএসসি পরীক্ষা নিয়ে দেখা গেছে প্রায় ৮০০ স্কুল থেকে কেউ পাশ করতো না। এখন ৩/৪টি তে নেমে এসেছে। পরীক্ষার শুরুতে প্রায় ২০ লাখ পরীক্ষা দিতো এখন ৩০ লাখ দেয়-সংখ্যা বেড়েছে। এখনও ১০ লাখ শিক্ষার্থী পিএসসির আগে ঝরে পড়ে।

পরীক্ষা না নিলে কী হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে এন আই খান বলেন, ‘যদি কোন স্কুল বা শিক্ষক দায়িত্ব পালন না করেন তবে ৮ বছরের মধ্যে বোঝার কোন উপায় নেই। আট বছর পর দুর্বলতা জেনে কোন লাভ হবে না। ১১ বছর বয়সে পাবলিক পরীক্ষার দেয়ায় কনফিডেন্স ডেভেলপমেন্ট করে। সার্টিফিকেট পাওয়া সে ‘এচিভমেন্ট’ মনে করে আরো এগিয়ে যেতে চায়। এই ড্রাইভটি আর থাকবে না। সমাপনী পরীক্ষাকে উপলক্ষ করে গ্রামের অনেক অভিভাবক পড়াশোনা করাতে আগ্রহী হন। সেটা আর থাকবে না।

বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে কেন একই কাজ করা যাবে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সকল স্কুলের, সকল শিক্ষার্থীর, সকল বিষয়ের পরীক্ষার ফলাফল কম্পাইল করে বিশ্লেষণ করে প্রয়োগ করলে আপাতত কাজ চলতে পারে।

তিনি বলেন,  ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু না করে পিএসসি পরীক্ষা বন্ধ করা ঠিক না। ধারাবাহিক মূল্যায়ন করার ক্ষমতা অর্জনের জন্য তিনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।  ক) প্রতিটি স্কুলে ব্রডব্যান্ড কানেকশন ও কম্পিউটার দিতে হবে। খ) এ জন্য পিটিআই-এ বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করতে হবে। গ) গবেষণার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, মতামত বা কোনো অভিভাকের দাবির ভিত্তিতে নয়।

যদি পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা তুলে দেয়ার জন্য এডামেন্ট হন তবে, বার্ষিক, ষান্মাসিক পরীক্ষার ফলাফল এনালিটিকস সফটওয়ার দিয়ে বিশ্লেষণ করে সকলকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনার গুরুত্বপূর্ণ।

২০০৯ খ্রিস্টাব্দে চালু হওয়ার পর কী কী লাভ বা ক্ষতি হয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট গবেষণা নেই। ২০০৮ থেকে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপতরের মহাপরিচালক ছিলেন এন আই খান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027379989624023