কুমিল্লার লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট চরমে। কৃষিবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিষয়ে কোনো শিক্ষক নেই। দর্শন বিষয়ের একজন শিক্ষক সমাজকর্মের ক্লাস নিলেও কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা তাও পাচ্ছেন না। এতে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
কলেজের কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি) এক হাজার ১৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সমাজকর্মে উচ্চ মাধ্যমিকে ৩৬২ জন এবং ডিগ্রি পাস কোর্সে তিন শিক্ষাবর্ষে ৫৯০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। কলেজে কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকের পদ দুটি কয়েক বছর ধরে শূন্য। এ ছাড়া সমাজকর্ম বিষয়ে দুটি পদ রয়েছে। একটি সহকারী অধ্যাপকের অপরটি প্রভাষকের। চার বছর আগে সহকারী অধ্যাপক শামীমুল ইসলাম অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। আর প্রভাষক পদটি এক বছর আগে শূন্য হয়। এই দুটি বিষয়ে কলেজে কোনো শিক্ষকই নেই। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে শূন্যপদগুলো পূরণের দাবি জানিয়েছে।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের ১ মে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। এটি লাকসামের একমাত্র সরকারি কলেজ। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এই কলেজে স্নাতক (সম্মান) বিভাগ চালু হলেও অবকাঠামোগত তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে কলেজটিতে সাতটি বিষয়ে অনার্স (সম্মান) কোর্সে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫২৩ জন।
কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক দেওয়ান মোহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত জানান, ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে সম্মান বিভাগ চালু হওয়ার কারণে কলেজটিতে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক ও প্রদর্শকসহ ৭৯ জন শিক্ষকের পদ তৈরি হওয়ার কথা থাকলেও তা আজ পর্যন্ত হয়নি। ওই সব পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫০ জন শিক্ষক। ১৭টি পদই শূন্য।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বাবুল চন্দ্র শীল বলেন, ‘গত বছরের ১১ জুন আমি এ কলেজে যোগদান করি। যোগদানের পর দেখলাম এখানে শিক্ষক-কর্মচারী সংকট প্রকট। কৃষিবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিষয়ে কোনো শিক্ষক নেই। এমনকি খণ্ডকালীন শিক্ষকও নেই। শিক্ষকের পদগুলো পূরণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করে সরাসরি আবেদন দিয়ে এসেছি।’
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক সোমেশ কর চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারীর পদগুলো শূন্যের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) অবগত রয়েছে।’