নতজানু শিক্ষা আইনের প্রয়োজন নেই

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

শিক্ষা আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় নোট ও গাইড বই প্রকাশ এবং কোচিং ও প্রাইভেট টিউশনির সুযোগ রাখা হয়েছে। এ নিয়ে গত বুধবার একটি জাতীয় দৈনিক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, উলি্লখিত সুযোগ সংবলিত খসড়াটি ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় নোট-গাইড সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোন প্রকাশক বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি শুধু সহায়ক পুস্তক বা ডিজিটাল শিখন-শেখানো সামগ্রী প্রকাশ করতে পারবেন। কিন্তু কোন ধরনের নোটবই, গাইড বই বা নকল মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ ও বাজারজাত করা যাবে না। খসড়ায় ছায়া শিক্ষার নামে প্রাইভেট টিউশনি ও কোচিংয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছেন, শিক্ষানীতির আলোকে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছেন।

আমরা প্রথমেই বলতে চাই, শিক্ষা আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় শিক্ষানীতির যথাযথ প্রতিফলন ঘটেনি। নোট-গাইড ও কোচিং-প্রাইভেট প্রশ্নে শিক্ষা আইনের খসড়ায় শিক্ষানীতিতে নোট-গাইড ও কোচিং-প্রাইভেট বন্ধ করার কথা ছিল। শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন সময় বলেছেন, নোট-গাইড, কোচিং-প্রাইভেট বন্ধ করা হবে। কেউ নোট-গাইড প্রকাশ করলে বা কোচিং-প্রাইভেটে জড়িত হলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার শাস্তি আরোপের কথাও বলা হয়। অথচ আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় ইউটার্ন করা হয়েছে।

আইনের চূড়ান্ত খসড়া থেকে মনে হচ্ছে- সরকার প্রতিক্রিয়াশীল ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কাছে নতিস্বীকার করেছে। কোথায় নোট-গাইড প্রকাশের জন্য জেল-জরিমানা করা হবে। তার বদলে কৌশলে নোট-গাইডের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নোট-গাইডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আর সময়ে সময়ে অভিযান চালিয়ে এটা বন্ধ করা যায়নি। এখন আইন করে এসব প্রকাশের সুযোগ রাখলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আনুষ্ঠানিকভাবেই হত্যা করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী নিজেই বিভিন্ন সময় বলেছেন, দেশে ৩২ হাজার কোটি টাকার কোচিং বাণিজ্য চলছে। তিনি এই বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু খসড়া আইনে কৌশলে কোচিং বাণিজ্যের পক্ষেই বিধান রাখা হয়েছে।

নোট-গাইড এবং কোচিং-প্রাইভেট যদি থাকবেই তাহলে আর শিক্ষা আইনের কী দরকার- সেটা একটা প্রশ্ন। আইন ছাড়াই তো এগুলো চলছে। আইন ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা গোল্লায় যাচ্ছে যাক। এখন আইন করে দেশের শিক্ষাকে গোল্লায় যাওয়া ত্বরান্বিত করার কোন প্রয়োজন আমরা দেখি না। আমরা শুধু এটুকু চাইব যে, শিক্ষার জন্য ক্ষতিকর কোন আইন করা থেকে সরকার যেন বিরত থাকে। শিক্ষার ক্ষেত্রে দুষ্ট উপাদানগুলো যদি আইনে ভিত্তি পেয়ে যায় তাহলে শিক্ষা ও জাতির ভবিষ্যৎ যে সরকারই ধ্বংস করতে উদ্যত হয়েছে- সেটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হচ্ছে হোক- আইন করে ধ্বংস ত্বরান্বিত করার কোন প্রয়োজন রয়েছে বলে আমরা মনে করি না।

 সূত্র: দৈনিক সংবাদের সম্পাদকীয়


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028171539306641