দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : বাস্তবায়ন শুরু হওয়া নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করে অভিজ্ঞ, দেশপ্রেমিক, দ্বীনদার শিক্ষাবিদদের সম্পৃক্ত করে যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছে দলটি। একইসঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীরা সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন বাতিল ও আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন।
রোববার দুপুরে বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর এসব দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেন দলটির সাত সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। স্মারকলিপিতে দেশের রাজনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একগুচ্ছ দাবি তুলে ধরা হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর নেতৃত্বে মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ফজলে বারী মাসউদ এবং মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বঙ্গভবনে স্মারকলিপি জমা দেন।
শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দাবিগুলো হলো, বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করা এবং যুগোপযোগী শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে অভিজ্ঞ, দেশপ্রেমিক, দ্বীনদার শিক্ষাবিদদের সম্পৃক্ত করা। শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও সব পরীক্ষায় আবশ্যিক করা। ডারউইনের অপ্রমাণিত, ভ্রান্ত ও বিতর্কিত বিবর্তনবাদ শিক্ষার সব স্তর থেকে বাদ দেয়া। পাঠ্যপুস্তকের সব বিষয় থেকে অনৈসলামিক ও ইসলামী বিশ্বাস বিরোধী বিষয় ও শব্দ বাদ দেয়া। ইসলাম ধর্ম শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ‘কুরআনুল কারীম’ শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা। মাদরাসা শিক্ষার কারিকুলাম, শিক্ষানীতিমালা-২০১০ অনুযায়ী মাদরাসা সংশ্লিষ্ট আলেম, দ্বীনদার শিক্ষকদের দ্বারা সংশোধন করা। নৈতিকতা সমৃদ্ধ জনশক্তি তৈরির লক্ষে সব ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা। বাংলা, ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও ইতিহাস বই থেকে বিতর্কিত ও ইসলামী আকিদা বিরোধী প্রবন্ধ বাদ দেয়া। স্কুল ও মাদরাসার সব পাঠ্যপুস্তক অপ্রয়োজনীয় এবং অশ্লীল চিত্রমুক্ত রাখা। ইসলাম ও মুসলমানদের হেয়প্রতিপন্ন করা প্রবন্ধগুলো বাদ দিয়ে প্রমাণিত ও সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরা। আগের মতো নবম শ্রেণি থেকেই বিভাগ বিভাজনের পদ্ধতি বলবৎ রাখা এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক বইগুলো পৃথক রাখা। জোর করে চাপিয়ে না দিতয়ে দেশবাসীর ধর্মীয় বোধ বিশ্বাসের অনুকুলে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।
দলটির রাজনৈতিক দাবিগুলো হলো, চলতি সংসদ ভেঙে দিয়ে সব প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করা। রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতারকৃত বিরোধী দলের সব নেতা-কর্মী এবং ওলামায়ে কেরামকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির মধ্যস্থতায় সংলাপের আয়োজন করা। নির্বাচন কমিশন বাতিল করা।
ও ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বন্ধ করা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বলছে, রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আগে কোনো অবস্থাতেই দেশে কোনো নির্বাচন করা যাবে না।
রোববার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করতে বের হন দলটির নেতাকর্মীরা। পরে দৈনিক বাংলা মোড়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ সদস্যরা।
সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে। ইসলামী আন্দোলন একটি শান্তিপূর্ণ দল। তাই পুলিশের অনুরোধে আমরা এখানে গণ-জমায়েত শেষ করে সাতজনের প্রতিনিধি দল নিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছি৷