বিশেষ বিবেচনায় ৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর বিশেষ ২২ ধারা ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। প্রায় এক বছর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিবেচনার জন্য পাঠানো ফাইলে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান এমপিও (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) নীতিমালার সব শর্ত পূরণ না করলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। বিদ্যমান নীতিমালার সামান্য একটু -আধটু শর্ত পূরণ করতে পারছিলো না। আর দীর্ঘদিন ধরে এমপি-মন্ত্রীরা সুপারিশ করে আসছিলেন। মূলত এ কারণেই গতবছর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন উদ্যোগ নেয়।
জানা যায়, এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রস্তাবে গত সোমবার অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদেশ সফররত শিক্ষামন্ত্রী দেশে ফেরার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে সরকারি আদেশ জারি করা হবে বলেও জানা যায়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত-সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এ সংক্রান্ত নথিতে প্রধানমন্ত্রী সই করেছেন।
অপর এক সূত্রমতে, এ তালিকায় কোনো কারিগরি ও মাদরাসা নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের অধীনে দুই হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। সামান্য শর্তপূরণ না হওয়ায় এমপিওভুক্ত হতে পারেনি প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপিদের নির্বাচনী এলাকার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করা হবে বলে গত নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তারা।
এমপিও নীতিমালার ২২ ধারায় যা আছে
এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুযায়ী, ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করা হয়। ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা (৩০ নম্বর), পরীক্ষার্থীর সংখ্যা (৩০ নম্বর) এবং পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার (৪০ নম্বর)। তবে, এ নীতিমালার ২২ ধারায় বিশেষ ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করে এমপিওভুক্তির বিধান রাখা হয়েছে।
২২ ধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষায় অনগ্রসর, ভৌগোলিকভাবে অসুবিধাজনক, পাহাড়ি এলাকা, হাওর-বাওর, চরাঞ্চল, ছিটমহল, বস্তি এলাকা, নারী শিক্ষা, সামাজিকভাবে অনগ্রসর গোষ্ঠী (প্রতিবন্ধী, হরিজন, সেবক, চা-বাগান শ্রমিক, তৃতীয় লিঙ্গ ইত্যাদি) এবং বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, চারুকলা, বিকেএসপিসহ সংস্থা পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলযোগ্য। এই ২২ ধারায় ৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘকাল ধরে আমাদের দেশের বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। প্রথমে উদ্যোক্তাদের নিজস্ব তহবিল ও টিউশন ফি থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে যাচাই বাছাই করে এমপিওভুক্ত করা হয়। প্রথমে হয় প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত পরে নিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের যোগ্যতা যাচাই করে এমপিওভুক্ত করা হয়। সমপদে কর্মরত সরকারি শিক্ষকদের মূল বেতন স্কেলের শতভাগ সমান দেওয়া হয় এমপিওভুক্তদের । এমপিও শিক্ষকদের পেনশন সুবিধা নেই। শুধু আংশিক বাড়ী ভাড়া, উৎসব ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়। এছাড়া অবসরে গেলে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণট্রাস্ট থেকে এককালীন কয়েকলাখ টাকা পান।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।