নদী ভাঙনে আটগ্রাম প্রাইমারি স্কুলের বিলীন হওয়ার আশঙ্কা

নওগাঁ প্রতিনিধি |

১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সবচেয়ে পুরোনো আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনে বিলীনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রতিনিয়ত ভাঙনের ফলে ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের কিছু অংশ চলে গেছে নদীগর্ভে। কয়েকদিনের টানা অতি বৃষ্টির কারণে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের পেছন দিক এবং খেলার মাঠের কিছু অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। যে কোনো সময় পুরো বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

জানা যায়, অনগ্রসর শিশুদের শিক্ষাদানের লক্ষ্যে প্রায় ৩শ বছর আগে বাংলা-বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ-দৌলার পরাজয়ের বছর ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপন করা হয় বিদ্যালয়টি। নদী ও বিলে আবৃত বিদ্যালয়টিতে মানুষের শিক্ষার উন্নয়ন ঘটলেও পিছু ছাড়েনি দুর্যোগ এবং নদী ভাঙন।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার সাথে প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কালিকাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম আটগ্রাম। গ্রামের পূর্বদিকে ছোট যমুনা নদী দক্ষিণে আত্রাই নদী এবং পশ্চিমে রয়েছে বিরাট আকারের বিল। বর্ষাকালে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী এবং গ্রামের মানুষের এপার-ওপার যাতায়াতে একমাত্র ভরসা নৌকা। ছোট যমুনা নদীর পাড়েই রয়েছে আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ৬ কক্ষের ২টি ভবনের বিদ্যালয় থেকে ছোট যমুনা এক সময় অনেক দূরে ছিল। নদী ভাঙনের ফলে গতি পথ পরিবর্তন করে যমুনা এখন বিদ্যালয় ভবন ছুঁয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ের মাঠসহ বেশ কিছু জমি ইতোমধ্যে গ্রাস করেছে ছোট যমুনা। বর্তমানে নদী ভাঙন ভবন পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় বিদ্যালয় বাঁচানো নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষক ও এলাকার মানুষ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকুল জানান, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের ৮-১০ শতক জমি নদীতে চলে গেছে। পানির স্রোত এত বেশি যে, ভাঙন ক্রমেই বেড়ে বিদ্যালয় ভবনে ঠেকে গেছে। দ্রুত সিমেন্ট ও পাথরের ঢালাই অথবা ব্লক দিয়ে স্থায়ীভাবে মেট্রিসিন করা না হলে প্রাচীন এই বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব নয়। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি টিকিয়ে রাখার জন্য জরুরিভাবে উত্তর ও পূর্ব পাশ দিয়ে স্থায়ীভাবে নদীর তীরে গাইড ওয়াল ও ব্লক দিয়ে সুরক্ষা প্রাচীর দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। তা না হলে ভাঙ্গনে বিদ্যালয়টি যে কোনো সময়ে নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমরা স্থানীয়দের অনুদানে বিদ্যালয় রক্ষায় কয়েকবার ইটের প্রাচীর নির্মাণ করেছিলাম কিন্তু নদীর স্রোতের কারণে তা বিলীন হয়ে গেছে। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সরকারিভাবে এ সমস্যার স্থায়ী একটি সমাধান চান।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বিদ্যালয় ভাঙনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, খুব শীঘ্রই সরেজমিনে যাবো এবং প্রাচীন এ বিদ্যালয়টি স্থায়ীভাবে রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্লক বা মেট্রিসিন নির্মাণ করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003148078918457