৩৬ তম বিসিএসে নন-ক্যাডার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এই বিসিএসে নন-ক্যাডারের জন্য অপেক্ষমাণ তিন হাজার ৩০৮ জনের বিপরীতে পিএসসি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদ পেয়েছে মাত্র ৭৮৭ টি।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বাইরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগে পিএসসির কাছে যে পরিমাণ চাহিদা এসেছে, সেখানে উত্তীর্ণ সবাইকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে। যদিও বিসিএসে উত্তীর্ণদের প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নিতে অনীহা আছে। কেননা এই পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির বলা হলেও এখনো শিক্ষকেরা বেতন পান ১১ ও ১২ তম গ্রেডে।
পিএসসি সূত্র জানায়, ৩৬ তম বিসিএসে ২ হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া উত্তীর্ণ ৩ হাজার ৩০৮ জনকে নন ক্যাডারে রাখা হয়।
পিএসসি নন ক্যাডারে নিয়োগ দিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে শূন্য পদ চেয়ে চিঠি পাঠায়। এতে বেশ কিছু সাড়া পেয়েছে পিএসসি। প্রথম শ্রেণির পদে ৪২২টি এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ৩৬৫ টিসহ মোট ৭৮৭টি শূন্য পদ পেয়েছে পিএসসি। আর প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক পদ রয়েছে কয়েক হাজার।
এ ব্যাপারে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘৩৬ তম বিসিএসে নন-ক্যাডারদের নিয়োগ দিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা শূন্য পদের চাহিদা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম তাতে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আশা করি ৩৫ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারদের মতোই এবারও সবাইকে নিয়োগ দিতে পারব।’
নন ক্যাডারে থাকা একাধিক প্রার্থী বলেন, পিএসসি চেষ্টা করলে আরও বেশি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদ নিয়ে আসতে পারে। এতে আমাদের জন্য ভালো হয়। আমরা প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে চাই না। কারণ সেটি তৃতীয় শ্রেণির ও ১২ তম গ্রেডের।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভা বৈঠকে বলা হয়, শূন্য পদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৬, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে শূন্য পদ ছিল ৩ লাখ ৯ হাজার ৫৯১ টি। ১০ হাজারের বেশি শূন্য পদ রয়েছে এমন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সংখ্যা ৯ টি। এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক ২০ নভেম্বর সংসদে জানিয়েছেন, সরকারের শূন্য পদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১।
নিয়োগবিধি বাতিলের কারণে আটকে আছে খাদ্য অধিদপ্তরের প্রায় চার হাজার নিয়োগ। খাদ্যমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়োগবিধি নতুন করে জারির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশা করি, শিগগিরই নিয়োগ দিতে পারব।’
গত অর্থবছরে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তরে ৮২ হাজার ৫৮৯টি পদে নিয়োগ দিয়েছে, যা ২০০৯ সালের পর বছরওয়ারি হিসাবে সর্বোচ্চ। ওই বছর ৭৫ হাজার ৯০৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
পিএসসি সূত্র জানায়, ৩৬ তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে ২৯২ টি, পুলিশ ক্যাডারে ১১৭ টি, কর ক্যাডারে ৪২ টি, পররাষ্ট্র ২০, নিরীক্ষা ও হিসাব ১৫, কৃষি ৩২২, মৎস্য ৪৮, স্বাস্থ্য সহকারী সার্জন ১৮৭, পশুসম্পদ ৪৩-সহ ২ হাজার ৩২৩ জন প্রার্থীকে সুপারিশ করা হয়।
৩৬ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় পাঁচ হাজার ৯৯০ জন উত্তীর্ণ হন। প্রথম শ্রেণির ২ হাজার ১৮০ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে ২০১৫ সালের ৩১ মে ৩৬ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত বছরের ৮ জানুয়ারি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। দুই লাখের বেশি পরীক্ষার্থী এতে অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন মাত্র ১৩ হাজার ৬৭৯ জন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাঁদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ১২ হাজার ৪৬৮ জন। চাকরিপ্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষা দেওয়া শুরু করেন ১২ মার্চ থেকে। তা শেষ হয় ৭ জুন।