নরেন্দ্র মোদির বন্ধু কে এই আব্বাস?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সম্প্রতি মা হীরাবেনের শততম জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি দীর্ঘ ব্লগ লেখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মূলত মাকে নিয়ে লেখা ব্লগে উঠে আসে মোদির শৈশব, যৌবন সংগ্রাম এবং আধ্যাত্মিক উন্মেষের বিভিন্ন কথা। নিজের ছোটবেলা এবং মাকে নিয়ে লেখা ব্লগে মোদি জানান, পিতৃবন্ধু রামসাদারের অকালপ্রয়াণে তার ছেলে আব্বাস তার পরিবারের সঙ্গেই বড় হন। ঈদের দিন আব্বাসের প্রিয় পদ রাঁধতেন হীরাবেন। মোদি লিখেছেন, আব্বাসই তার সব থেকে প্রিয় বন্ধু।

মোদির কথায়, “অপরের আনন্দে মা খুশি হন। আমাদের বাড়ি খুব ছোট ছিল ঠিকই কিন্তু মায়ের হৃদয় ছিল বিশাল। কাছের গ্রামে বাবার এক বন্ধু থাকতেন। অকালে তার মৃত্যুর পরে, তার ছেলে আব্বাসকে বাবা আমাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের বাড়িতে থেকেই আব্বাস পড়াশোনা শেষ করেছিল। আমাদের ভাই-বোনদের প্রতি মা যতটা যত্নবান, আব্বাসের প্রতিও ছিলেন ততটাই। প্রতি বছর ঈদে মা ওর পছন্দের খাবার তৈরি করতেন। উৎসবের সময় পাড়ার সব বাচ্চারা আমাদের বাড়ি আসত মায়ের তৈরি খাবারের লোভে।”

এক মুসলিম পরিবারের ছেলে সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে কীভাবে গুজরাটের মেহসানা জেলার ভাদনগরে মোদি পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিলেন এবং পারিবারিক প্রেম খুঁজে পেয়েছিলেন, তা-ও প্রকাশ পেয়েছে মোদির লেখায়। মোদির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করার সময় কীভাবে তাদের দুজনের মধ্যে অটুট বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তা নিয়েও লিখেছেন মোদি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই ব্লগ প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হুড়োহুড়ি পড়েছে। একটাই প্রশ্ন উঁকি মারছে সকলের মনে। কে এই আব্বাস? তিনি এখন কোথায় আছেন? এই কৌতূহলও অনেকের মনে দেখা যায় যে, যে বিজেপি দলের বিরুদ্ধে বার বার সাম্প্রদায়িক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই দলের জাতীয় মুখের প্রিয় বন্ধু কি না এক জন মুসলিম!

আব্বাস এখন কোথায়, সে প্রশ্নের উত্তর কৌতূহলীদের অনেকেই ইতিমধ্যে পেয়েছেন। মোদি যাকে প্রিয় বন্ধু হিসাবে দাবি করেছেন, সেই আব্বাস বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায়। সে দেশে নিজের ছেলের সঙ্গে থাকেন আব্বাস। বন্ধু মিয়াঁভাই রামসাদার প্রয়াণের পর মোদির বাবা দামোদরদাস মৃত বন্ধুর পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ান। অনুরোধ করেন, তারা যেন আব্বাসকে উচ্চশিক্ষার জন্য ভাদনগরে তার পরিবারের সঙ্গে থাকতে পাঠান।

আব্বাসের পরিবার ভাদনগরের পার্শ্ববর্তী কেসিম্পা গ্রামে বসবাস করত। কিন্তু সেই গ্রামের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করার সুবিধা ছিল না। বন্ধুপুত্রের পড়াশোনায় যেন ঘাটতি না থেকে যায় তা নিয়েও দামোদরদাস যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপরই আব্বাসের পরিবারের সম্মতিতে তাকে নিয়ে ভাদনগরে ফিরে আসেন দামোদরদাস।

খুব অল্প সময়েই না কি সখ্য হয়ে গিয়েছিল আব্বাস এবং মোদির। সূত্রের খবর অনুযায়ী, মোদির ভাই পঙ্কজ মোদি এবং আব্বাস একই ক্লাসে পড়তেন। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেন তিনি। ১৯৭৩-’৭৪ সালে আব্বাস যখন এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, মোদি তখন আরএসএস-এর প্রচারক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভাদনগর ছেড়ে আমদাবাদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

এরপর পঙ্কজ এবং আব্বাস দুজনেই সরকারি চাকরি পান। পঙ্কজ চাকরি পান তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগে এবং আব্বাস সিভিল সাপ্লাই বিভাগে। মোদির আর এক ভাই প্রহ্লাদ মোদিও তাদের বাড়িতে আব্বাসের থাকার সময়কালীন কিছু স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আব্বাস কয়েক বছর আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং দশম শ্রেণির পরীক্ষার পর চলে যান। তিনি আমার ভাই পঙ্কজের সহপাঠী ছিলেন।”

সূত্রের খবর, মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও আব্বাস এবং তার মধ্যে প্রায়ই কথা হত। এমনকি, মুখোমুখি বসেও বেশ কয়েক বার আড্ডা মেরেছিলেন দুই বন্ধু।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031461715698242