নানামুখী সংকটে কুমিল্লা সরকারি কলেজ

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

কলেজে শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন অন্তত ৩৭টি। আছে ৫টি ভবন মিলিয়ে ২২টি। শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুপাত ১: ১৬১। উপাধ্যক্ষসহ নতুন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে না দীর্ঘদিন। এ বছর নতুন আরও ৩টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স খোলার অনুমোদন এসেছে। কলেজে কোনো ছাত্রাবাস নেই, নেই পরিবহনব্যবস্থাও। অধ্যক্ষের বাংলোর অবস্থা খুবই নাজুক। এ রকম নানা সমস্যায় জর্জরিত কুমিল্লা সরকারি কলেজ।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে নগরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র কুমিল্লা পুলিশ লাইন এলাকায় কুমিল্লা কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৮৫ সালে কলেজটি জাতীয়করণ হয়। এরপর থেকে ওই কলেজের নাম কুমিল্লা সরকারি কলেজ। বর্তমানে এ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক (পাস কোর্স), স্নাতক (সম্মান) কোর্সে ৫ হাজার ৬৫০ জন শিক্ষার্থী আছেন। তাঁদের পাঠদানের জন্য ৩৭ জন শিক্ষকের মধ্যে বর্তমানে ৩৫ জন শিক্ষক কর্মরত। এর বাইরে খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন সাতজন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ছয়জন কর্মচারী রয়েছেন। এর বাইরে খণ্ডকালীন রয়েছে আরও ৩০ জন। এ কলেজে ৫টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। এসব ভবনের মধ্যে দক্ষিণ পাশের তিনতলা ভবনের অবস্থা খুবই নাজুক। পলেস্তারা খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। পাঁচটি ভবন মিলিয়ে ২২টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। শিক্ষার্থীর চাপ বাড়ায় এখন অন্তত আরও ১৫টি শ্রেণিকক্ষের দরকার।

কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ বি এম শিহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, ২২ বছর আগে ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। প্রতিটি বিভাগে তিনজন করে শিক্ষকের পদ রয়েছে। এসব বিভাগে ক্লাস চালুর জন্য সাতজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রতি ক্লাস বাবদ ৩৩০ টাকা করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থী ও বিভাগ বাড়ার পরও নতুন করে শিক্ষকের পদ তৈরি না হওয়ায় ক্লাস নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাংলা, অর্থনীতি ও গণিত বিভাগে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হবে। এসব বিষয়ের মধ্যে বাংলা বিভাগে ৪ জন, অর্থনীতিতে ৩টি পদের মধ্যে ২টিতে এবং গণিতে ২ জন শিক্ষক আছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের অন্তত ৫ জন শিক্ষক বলেন, অতীতে এই কলেজে যাঁরা অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁরা শিক্ষকের পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেননি। কেবল নিজের পদে বসে মেয়াদ পূরণ করেছেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানা আক্তার বলেন, ‘কুমিল্লা শহর ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কলেজে ছাত্রাবাস আছে। অথচ আমাদের এখানে কোনো ছাত্রাবাস নেই। শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই।’

দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব, নাজমুল হাসান ও পরিমল কান্তি দে বলেন, কলেজের পশ্চিম পাশে অন্তত ২৩ শতক জায়গা আছে। ওই জায়গায় ছাত্রাবাস নির্মিত হলে শিক্ষার্থীদের উপকার হতো।

কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দা বিলকিস আরা বেগম বলেন, এখন শিক্ষার্থীদের চাপ বেড়েছে। কিন্তু কলেজের আয়তন বাড়ানো ও শিক্ষকদের নতুন পদও তৈরি করা হয়নি দীর্ঘদিন। এসব সমস্যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে - dainik shiksha শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি - dainik shiksha বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা - dainik shiksha শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে - dainik shiksha ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে - dainik shiksha নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে - dainik shiksha ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা - dainik shiksha জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003000020980835