নারীদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করা শরিয়াবিরোধী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আফগানিস্তানে নারীদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ইসলামি শরিয়াহ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে জানিয়েছেন মিসরের আল-আজহার মসজিদের গ্র্যান্ড ইমাম শেখ আহমেদ আল-তায়েব।

সম্প্রতি সুন্নিমতাবলম্বী এ ইমাম এক বিবৃতিতে বলেন, শরিয়াহ আইনে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নারী ও পুরুষকে জ্ঞানার্জন করতে বলা হয়েছে।

উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ‘অবাক করার মতো’ বর্ণনা করে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গত সপ্তাহের শুরুতে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার সে দেশের নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করে এবং প্রাইভেট টিউশন কেন্দ্রগুলোর প্রতি আদেশ দেয় যেন তারা কোনো ছাত্রীকে শিক্ষাদান না করে।

মিসরের ইজিপ্ট টুডে ও আহরাম নামের দুটি সংবাদপত্র বলছে, ইমাম আহমেদ আল-তায়েব তাঁর বিবৃতিতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দুই হাজারের বেশি উক্তি উদ্ধৃত করেন এবং বিজ্ঞান, শিক্ষা ও রাজনীতির মতো ক্ষেত্রে বহু মুসলিম নারীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।

যেসব মুসলিম ও অমুসলিম ‘নারীশিক্ষা নিষিদ্ধ করা ইসলামে অনুমোদিত’ বলে বিশ্বাস করে, তাদের সতর্ক করে ইমাম আল-তায়েব বলেন, ইসলাম এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে। কারণ এটা ইসলামে নারী ও পুরুষকে যে সমান আইনি অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া

হয়েছে, তার বিরোধী। কাজেই এর বিপরীত কোনো দাবি করা ধর্মবিরোধী।

বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপের নিন্দা করেছে।

তবে তালেবানের উচ্চশিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রী নেদা মোহাম্মদ নাদিম বলেন, মেয়েরা পোশাকসংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলছিল না বলেই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। 

নেদা মোহাম্মদ নাদিম আরও বলেন, কিছু নারী শিক্ষার্থী এমন পোশাক পরছিল, যাতে মনে হতো যেন তারা কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছে। বিজ্ঞানের মতো কিছু বিষয় আছে, যা মেয়েদের পড়ানোর উপযুক্ত নয়।

২০ ডিসেম্বর উচ্চশিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রীর দেওয়া এক চিঠিতে আফগানিস্তানে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। মন্ত্রী বলেন, এই ঘোষণা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এর আগে দেশটিতে নারীদের বেশির ভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বাদ দেওয়া হয়। তিন মাস আগে আফগানিস্তানজুড়ে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় মেয়েদের জন্য কিছু বিষয়ে পড়াশোনার ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

পশুচিকিৎসা, বিজ্ঞান, প্রকৌশল, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা এবং কৃষিতে মেয়েদের পড়াশোনা কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছিল। এ ছাড়া গত বছর তালেবান ক্ষমতা দখলের পর, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লিঙ্গভিত্তিক আলাদা শ্রেণিকক্ষ এবং প্রবেশপথ চালু করে। নারী শিক্ষার্থীদের শুধু নারী অধ্যাপক বা বয়স্ক পুরুষদের মাধ্যমে পাঠদানের নিয়ম করা হয়।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের শিক্ষা খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত বছর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী দেশটি থেকে প্রত্যাহারের পর প্রশিক্ষিত শিক্ষাবিদেরা আফগানিস্তান ত্যাগ করেছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026910305023193