নার্সিং কোর্স পরিচালনায় মেডিকেল টেকনোলজি বোর্ড গঠনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নার্সিং ও মেডিকেল টেকনোলজি কোর্স পরিচালনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মেডিকেল টেকনোলজি বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছেন মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। মেডিকেল টেকনোলজি বোর্ড গঠনের আগ পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনেই নার্সিং ও মেডিকেল টেকনোলজি কোর্স পরিচালনার দাবি জানানো হয়েছে। একইসাথে কারিগরি বোর্ডের অধীনেই চলতিবছর প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চায় প্রতিষ্ঠানগুলো। আর নার্সিং ও মেডিকেল টেকনোলজি কোর্স পরিচালনায় ‘ওয়ান আমব্রেলা কনসেপ্ট’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টরা। 

শনিবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন করে এসব দাবি জানায় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বোর্ড অ্যাফিলিয়েটেড সোসাইটি ফর মেডিকেল টেকনোলজি ইন্সটিটিশনস্ (বামি)। 

মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টরা জানান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড পরিচালতির স্বাস্থ্য প্রযুক্তি ও সেবা শিক্ষাক্রমের অধীন ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৮টি বিষয়ে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ও নার্সিং টেকনোলজি কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। ৪৫০টি মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। বোর্ড থেকে একই শিক্ষাক্রমে পাস করা টেকনোলজিস্টরা বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছে।  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে ৪ নভেম্বর একটি গেজেটে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আইন-২০১৮-এর কয়েকটি অংশ বিলুপ্ত করা হয়। এছাড়া বোর্ড আইনে ২০১৮-এর একটি অংশ সংশোধন করা হয়েছে। ফলে কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরিচালিত মেডিকেল টেকনোলজি ও নার্সিং কোর্স বন্ধ হয়ে যায়। গত ১৫ বছর ধরে কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরিচালিত এ কোর্স দুটি পরিচালিত হচ্ছিল।

এ প্রেক্ষিতে নার্সিং ও মেডিকেল টেকনোলজি কোর্স পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এসব কোর্স পরিচালনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মেডিকেল টেকনোলজি বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছেন। আর কোর্সগুলো পরিচালনায় কয়েকদফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন তারা। মানববন্ধনে জানানো দাবিগুলো হল, মেডিকেল টেকনোলজি ও নার্সিং শিক্ষা পরিচালনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে আন্তর্জাতিক মানের বোর্ড গঠন যাতে করে ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীরা ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে লাভবান হতে পারে, যতদিন একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল টেকনোলজি ও নার্সিং শিক্ষা বোর্ড না হয় তত দিন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় কোর্সগুলো আগের মত পরিচালনা করা, কারণ বোর্ড ছাড়া কেউ এইচএসসি সমমান সনদ দিতে পারে না আর চাকরির ক্ষেত্রেও সনদ প্রয়োজন, বোর্ড থেকে সনদ প্রদান ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে নার্সিং কোর্সগুলো পরিচালনায় ‘ওয়ান আমব্রেলা কনসেপ্ট’ বাস্তবায়ন করা ও অবিলম্বে নার্সিং ও মেডিকেল টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা।

এ বিষয়ে বামির রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতির প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নার্সিং ও মেডিকেল কোর্সগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিচালনা করতে চাচ্ছে কারণ বিষয়গুলো স্বাস্থ্য বিষয়ক। যদিও এমবিবিএস, বিএসসি নার্সিং, বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজি, বিএসসি ইন ফিজিওথেরাপি ইত্যাদির সনদ বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে থাকে। চিকিৎসা অনুষদ ও নার্সিং ও ফার্মেসী কাউন্সিল কোন স্বীকৃত বোর্ড নয় বলেই বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড  ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্সের সনদ দিচ্ছিল। যে সনদগুলো সাহায্যে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হতে পারে। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে আন্ত মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্তে কারিগরি বোর্ডকে এই শিক্ষাক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। শর্তছিল, যতদিন মেডিকেল টেকনোলজি ও নার্সিং শিক্ষাদানের আলাদা বোর্ড না হয় ততদিন কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। পরবর্তীতে এসব কোর্সের শিক্ষার্থীদের মাঠ প্রশিক্ষণ সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোতে দেয়ার অনুমোদন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেয়া হয়।

তিনি আরও জানান, এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ ও নার্সিং কাউন্সিল আদালত এর স্বরণাপন্ন হয়। যদিও নার্সিং কাউন্সিলের কাজ হল নার্সিং লাইসেন্স প্রদান করা, শিক্ষা সনদ প্রদান করা নয়। আদালত নির্দেশনা দিয়েছিল ‘ওয়ান আমব্রেলা কনসেপ্ট’ বাস্তবায়ন করার। অর্থাৎ  বোর্ড থেকে সনদ প্রদান ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে নার্সিং কোর্সগুলো পরিচালনা করা। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষা ও নার্সিং কোর্স কারিগরি শিক্ষার আওতায় এসে আইন পাস হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসলে নির্দেশনা দেয়া হয় এক ছাতার নিচে এনে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করা। কিন্তু সে নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি স্থগিত করা ও নতুন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ ও নার্সিং কাউন্সিলের অনুমোদন নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা ৪৫০ টি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়ার প্রক্রিয়ার সামিল। এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের গাত থেকে বাঁচাতে আমরা চার দাবি জানিয়েছি।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032730102539062