অন্তরালোকে
হে মহিয়সী সেবিকা, তুমি অন্তহীন সেবাদানে অন্যন্যা।
আকাশকোনে যেন নীরব ক্লান্তিহারা উজ্জ্বল তারকা।
মানব সেবায় বহুরুপে তুমি বহুগুনে গুনানন্বীতা।
ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল তুমি, সংগোপনে মাদার তেরেজা।
তুমি মনোরমা, ঝঞ্জায়-দুর্যোগে, নিত্য প্রলয়ের দিনে সেবাদানে-আর্তের মুক্তির পুলকদানে তুমি ব্যথ্যাবিদ্ধ নির্ভীক স্নেহময়ী মাতা যারা উদভ্রান্ত, অবিশ্রান্ত শোককাতুরে জর্জরিত কঠিন রোগে আক্রান্ত ক্লেদক্লিষ্ট পৃথীবির পান্থশালায় যারা বারোমাস সকরুন-বিষন্ন, তাদের অন্ধকার চৈতন্যের তীরে তুমি দণ্ডায়মান দিনরাত্রী জাগ্রত।
তুমি প্রভাতসূর্য সুষ্টিসেবার প্রথম সুর, দঃখীর সেবায় দগ্ধ চিত্ত পাহারাদার স্নেহে প্রেমে, মমতায় জ্বালাময় আত্মার আকাশে অগ্নিময় রঙধনু রথ।
তুমি অক্ষয়, অবিনাশী, পৃথিবীর বক্ষে রোমানঞ্চিত প্রাণের উল্লাস। তুমি অমৃতের স্পর্শ, রুগ্ন পীড়িতদের কারাগৃহ ছিন্ন করি আনো প্রাণের জোয়ার।
তুমি যেনো প্রাণের সলতে নিঃশ্বেষে জ্বলতে জ্বলতে- আঁধিয়ারে বিদায় জানাতে আলোক সন্ধানী অভিযাত্রীদল।
তুমি বিধাতার অক্ষয় দান, বিরাট প্রাণ ব্যথিতের আশ্রয়। কঠিন, কঠোর, অবনত-অটল বিনয়ী বিন্ধ্যাচল। শোকতুরা, দুঃখী, মরন পথের যাত্রী পরাজিত মূমুর্ষের মরনে মৃত্যুঘরের কোনে তুমি নীরব উদ্গত কান্নারত অশ্রুজল।
যুদ্ধের ময়দানে, স্তিমিত দিনের উদ্ধত ঘনঘটায় তুমি অনন্ত প্রহরী কখনো অভূক্ত-অনাহারী সারানিশি মূমূর্ষের সেবাদানে জাগরনী। শত্রু বেষ্টিত প্রহরায় লাঞ্চিত, অনেক ক্লান্ত দিনের পরের দিন।
তুমি ভুলেছ নিজের কষ্ট সীমাহীন দৃড় প্রত্যয়ে ডিঙ্গিয়ে বাধা যত-মানব সেবায় সকলের তরে করেছ শপথ, যুগ-যুগান্তর। তুমি উপমা লক্ষ-কোটি সহস্র বেদনাহত মানুষের শেষ-আশ্রয়।
তুমি চেতনা, স্বপ্ন, নিস্তার, বিস্তার পৃথিবীর গতি সংগ্রাম নিরবধি, মানব সেবায় ব্রতী, হে আত্মত্যাগী ধরনীর শ্রেষ্ঠ তুমি-
তুমি কালজয়ী।
অ্যালভীন দীলিপ বাগচী : লেখক, কবি ও গবেষক।