ইউএনওর সহযোগিতায় নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই ঠেকিয়ে দিলেন লিলি খাতুন নামে ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রী। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) নাটোরের বড়াইগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
লিলি খাতুন উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের আদগ্রাম গুচ্ছপাড়া এলাকার আব্দুল লতিফের মেয়ে এবং আদগ্রাম শহিদ শাহজাহান উচ্চ বিদ্যালয়েল ১০ম শ্রেণির ছাত্রী।
জানা যায়, নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে স্যারের মোবাইল থেকে ইউএনও স্যারের সহযোগিতা চান ১০ম শ্রেণি পড়ুয়া ওই ছাত্রী। ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে লিলি খাতুনের বাড়িতে পাঠান এবং বিয়ে বন্ধ করান।
লিলি খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তারা চার বোন, বাবা দরিদ্র কৃষক। বড়বোন ভালো ছাত্রী ছিল। কিন্তু বাবা জোর করে বিয়ে দিয়েছেন ৯ম শ্রেণিতে পড়ার সময়। এখন আবার তাকে বিয়ে দিচ্ছেন।
লিলি আরও জানান, শুনিছে ছেলে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের। সেও একজন কৃষক। তার ইচ্ছে পড়ালেখা শেষ করে নিজের পায়ে দাড়াবে। ভালো রেজাল্ট করে পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন লিলি।
আদগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসহাক আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, লিলি অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। তার বাবা দারিদ্র্যতার অজুহাতে বিয়ে দিতে চাচ্ছে। আমরা বুঝিয়ে কোনো সুফল পাইনি। তার বড়বোনকে একইভাবে বিয়ে দিয়েছে।
লিলির বাবা আব্দুল লতিফ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি গরিব মানুষ, তাই সাহস পাই না। বেশি লেখাপড়া শেখালে বেশি খরচ করে বিয়ে দিতে হবে। এত খরচ আমরা কোথায় পাব। তাই বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। এখন ভুল বুঝতে পেরেছি, আর বাল্যবিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো না।
বড়াইগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মোমিন আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি নিজে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেছি। একই সাথে স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং গ্রাম পুলিশকে এ বিষয়ে খোঁজ রাখতে বলেছি। আশা করি আমরা লিলির স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করতে পারবো।
ইউএনও আনোয়ার পারভেজ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বাল্যবিয়ে একটি অপরাধ, সমাজের অভিশাপ। বাল্যবিয়ে বন্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। লিলি অত্যন্ত সাহসের পরিচয় দিয়েছে। এই সাহসকে কাজে লাগিয়ে সে বড় মানুষ হতে পারবে।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে লিলির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এক দিনমজুর বরের সাথে।