নিজের শ্রাদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর ফিরল পিঙ্কি!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কানে শুনেছিলেন, রেলে কাটা পড়ে মারা গিয়েছে মেয়ে। মৃতদেহ দেখার প্রয়োজন বোধ করেননি মা-বাবা। দেহ না দেখেই পারলৌলিক কাজ সেরে ফেলা হয় মৃত মেয়ের। আচমকা সেই মেয়েই ফিরে এসেছে। তাতেই প্রায় ভূত দেখার মতো অবস্থা হয়েছে পরিবার তথা এলাকাবাসীর। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে তেহট্টের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ময়ড়া পাড়ায়। ওই পরিবার জানিয়েছে, মহালয়ার দু’দিন পর পিঙ্কি হালদার নামে দশ বছরের মেয়েটি বাড়ি থেকে চলে যায়। ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। মা কাকলি হালদার অনেক খুঁজেও দেখা পায়নি মেয়ের। পলাশি স্টেশনে এসে কাকলি শুনতে পান, তার মেয়ের দেহ ট্রেনে কাটা পড়েছে। তা শুনে কোনও রকম খোঁজখবর না নিয়েই মেয়ের মৃত্যু মেনে নেন মা। এমনকি, গঙ্গাস্নানও করেন। বাড়ি ফিরে স্বামীকে জানান। এর পরে মৃত মেয়ের পারলৌকিক কাজ সারেন কাকলি ও তাঁর স্বামী কুসী হালদার।

কিন্তু মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করেই বাড়িতে হাজির হয় পিঙ্কি হালদার। হতচকিত হয়ে পড়েন কাকলি ও কুসী। এর পর ধীরে ধীরে লোক জানাজানি হতে শুরু করে। ভিড় জমে যায় তাঁদের বাড়িতে। স্বাভাবিক ভাবেই এখন এলাকার মানুষজনের মধ্যে অন্যতম আলোচনার বিষয় পিঙ্কির এই অভাবনীয় প্রত্যাবর্তন।

কাকলি বলেন, ‘‘মেয়ে ফিরছে না দেখে ওকে বহরমপুরে খুঁজেছি। পলাশিতেও খুঁজেছি। দু’মাস আগে পলাশি গিয়ে শুনলাম, পিঙ্কি নাকি ট্রেনে কাটা পড়েছে। বাড়ি ফিরে স্বামীকে জানাই। এর পরেই নিয়ম মেনে কাজ করা হয়। তার পর হঠাৎ মঙ্গলবার সকালে পিঙ্কি বাড়িতে আসে। অবাক হয়ে যাই।’’

একটি ছোট্ট কুঁড়েঘরে কুসী হালদার ও কাকলি হালদার থাকেন। মাছ ধরে সংসার চালান কুসী। কুসী হালদার এ দিন জানান, ৮-৯ মাস আগে কাকলিকে বিয়ে করেন। কাকলির বাড়ি ছোট নলদাহয়। কাকলি বহরমপুর স্টেশনে ভিক্ষা করে দিন চালাতেন। আগের পক্ষের কাকলির একটি বিয়ে ছিল এবং মেয়েও ছিল। দু’জনকেই বাড়িতে আনেন তিনি। কিন্তু মেয়ে পিঙ্কি নিশ্চিন্তপুরের বাড়ি থেকে মাঝেমধ্যেই বহরমপুর চলে যেত একা। সেখানেই স্টেশনে ভিক্ষা করে খেত। আবার, কোনও কোনও দিন বাড়ি ফিরত। 

কুসী বলেন, ‘‘মহালয়ার দু’দিন পর থেকে পিঙ্কিকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ভেবেছিলাম, আবার হয়তো বহরমপুরে গিয়েছে। কিন্তু অনেক মাস কেটে গেল সে আর বাড়ি ফেরেনি।’’

প্রিয়া হালদার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘পিঙ্কিকে দেখে আমরা চমকে উঠি। আমরা জানতাম, ও বাড়িতে থাকত না। মাঝে মধ্যে বহরমপুর চলে যেত, আবার ফিরেও আসত। কিন্তু এত দিন আসেনি। আর পরিবার থেকেও জেনেছিলাম ও পলাশিতে কাটা পড়েছে। এ জন্য  পিঙ্কিকে দেখে অবাক হয়ে যাই।’’

এ দিন ফিরে এসে পিঙ্কি বলে, ‘‘আমি সে ভাবে বাড়িতে থাকি না। এত দিন বহরমপুরে ছিলাম। কখনও স্টেশনে থাকি। সেখানে আমার একটা দিদার বাড়ি আছে। সেখানেও মাঝেমধ্যে গিয়েছি।’’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে - dainik shiksha তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত - dainik shiksha বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026471614837646