নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে ইউএনও অফিসে এসে লিখিত আবেদন দিয়েছেন নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রী। তার আবেদন পেয়ে প্রশাসন ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে এবং ১৮ বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে দিবেন না, এমন লিখিত অঙ্গীকার করিয়েছেন পিতাকে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নে।
জানা যায়, পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদের কাছে মঙ্গলবার বিকেলে ওই ছাত্রীর নিজ হাতে লেখা আবেদন নিয়ে আসলে তিনি দ্রুত সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফকে ঘটনাস্থলে পাঠান। নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রী (১৫) সদর উপজেলার কদমতলা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।
ওই ছাত্রী জানান, তার পরিবার থেকে তার বিবাহ ঠিক করেছিলো। কিন্তু তার বয়স কম এবং এটি বাল্যবিবাহ বলে সে এই বিয়েতে রাজি হয়নি। পরিবর্তীতে বিষয়টি তার মাদরাসার সুপারকে জানালে তিনি ইউএনও সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে তাকে লিখিত আবেদনসহ সেখানে পাঠান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়েটি বন্ধ করে দেন। তার বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়ায় সে খুশি।
কদমতলা বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার মুহা: আজাহার উদ্দিন জানান, প্রশাসন থেকে বাল্যবিবাহ বন্ধ করার জন্য মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সচেতন করে আসছিলো। এছাড়া পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেরও বাল্যবিবাহ রোধে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন। তাই ওই শিক্ষার্থী তার বাল্যবিবাহের কথা মঙ্গলবার তাকে জানালে তিনি তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন নিয়ে পাঠান।
পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ জানান, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তার কাছে নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য লিখিত একটি আবেদন নিয়ে তার অফিসে আসেন। তার আবেদনে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুপার মুহা: আজাহার উদ্দিনের সুপারিশ ছিলো। এরপর তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফকে শিক্ষার্থীর বাড়িতে পাঠিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে ওই শিক্ষার্থীর ভুমিকা প্রশংসার দাবিদার। তাকে দেখে অন্য শিক্ষার্থীরাও অনুপ্রেরণা পাবে।