বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার হলে নকলে সহায়তা করে ম্যাজিস্ট্রেট ও কক্ষ পরিদর্শকদের হাতে ধরা পড়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব। গত ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় নকল বা অসদুপায় অবলম্বন ঠেকানোর দায়িত্ব পান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা। অভিযুক্ত উপসিচবও একই দায়িত্ব পান। কিন্তু তিনি নিজেই কয়েকজন প্রার্থীকে নকলে সহায়তা করেছেন। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, ৩০ আগস্ট এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা চলাকালে বরিশাল অঞ্চলের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে এমসিকিউর তৈরি করা উত্তর সরবরাহ করেন ওই উপসচিব। এসময় তিনি ধরা পড়েছেন ম্যজিস্ট্রেটের হাতে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে পুলিশে হস্তান্তর করেননি। এমনকি ওই প্রার্থীদেরকেও বহিষ্কার করেননি। বিষয়টি নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার মধ্যে কথা হয়েছে। তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে ওই উপসচিব বরিশাল অঞ্চলের পরীক্ষা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কেও জানান বলে জানা যায়। এরপর ওই ডিসিকে পুরো ঘটনার প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার চারদিন পার হয়ে গেলেও ডিসি কোনও প্রতিবেদন দেননি। বরং মঙ্গলবার দৈনিক শিক্ষার দুই প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে দুই রকম তথ্য দিয়েছেন। দুপুরে টেলিফোনে জানতে চাওয়া হলে ডিসি বলেন, ‘এমন কোনও ঘটনা আমার জানা নেই।’
কিন্তু সন্ধ্যায় দৈনিক শিক্ষার অপর এক প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘হ্যাঁ একটা অভিযোগ পেয়েছিলাম যা খতিয়ে দেখার পর সত্যতা মেলেনি।’ এটুকু বলেই ফোন সংযোগ কেটে দেন। এরপর আর চেষ্টা করেও ডিসির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কেও জানানো হয়েছে। আমিও জানি। ডিসির কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অভিযুক্ত উপসচিবের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তাকে প্রথমে ওএসডি ও পরে বরখাস্ত করা হতে পারে বলে জানা যায়।
জানা যায়, গত ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এতে সারাদেশে ১১ লাখ ৭৬ হাজার প্রার্থী অংশগ্রহণ করে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য অনুযায়ী উলিপুর উপজেলায় একজন ভুয়া প্রশ্নফাঁসকারী আটক হয়েছেন। এছাড়া ঢাকাসহ কয়েকটি কেন্দ্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বিভ্রাটের কারণে বেশ কয়েকজন প্রার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি। অ্যাডমিট কার্ডে উল্লেখ থাকা কেন্দ্রের নামের সাথে বাস্তব প্রতিষ্ঠানের নামের সাইনবোর্ড মেলেনি। তাই প্রার্থীদের কেন্দ্রের প্রকৃত নাম খুঁজে বের করতে দেরি হয়েছে। আর এ দেরি হওয়ার দায়ে তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি।