নির্ধারিত সময়ের আরও এক মাস পরও বই ছাপাতে না পারা ও নিম্নমানের বই দেয়ায় ৫টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত হলেও এ সংখ্যা আরও বাড়বে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভুক্তসহ জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, কঠোর মনিটরিং করার পরও নির্ধারিত সময়ে পাঁচ মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান চলতি শিক্ষাবর্ষের বিনামূলের বই সরবরাহ করেনি। নিধারিত সময়ের পরে বই দিলেও তা ছিল খুবই নিম্নমানের। প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যাদেশ চুক্তির পরবর্তী ৯৮ দিনের মধ্যে শত ভাগ বই সরবরাহ করার কথা। আর ৪৫ দিনের মধ্যে অর্ধেক বই দিতে হবে।
চুক্তি অনুযায়ী গত ১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বই সরবরাহ করার শর্ত ছিল। আর জরিমানা দিয়ে ২৪শে ডিসেম্বর ছিল বই সরবরহারের শেষ দিন। কিন্তু মাধ্যমিকের কাজ পাওয়া তকদির প্রিন্টিং প্রেস ১৮৫ লটের দুই লাখ ৮৩ হাজার ৬৬২টি বই, শৈলী প্রিন্টার্স ২৫৫ লটের দুই লাখ দুই হাজার ৮২৭টি, মডেল প্রিন্টিং প্রেস ২৩৯ লটের দুই লাখ ৪৩ হাজার ৫৯৫টি, জাতীয় মুদ্রাণালয় ৩০৯ লটের দুই লাখ ৮৫ হাজার ৮৪টি এবং নাছের আর্ট প্রেস ২৫২ লটের দুই লাখ ৭০ হাজার ৭৭০টি বই সরবরাহ করেনি।
এরমধ্যে শৈলী প্রিন্টার্স ও মডেল প্রিন্টিং প্রেস নির্ধারিত সময়ের আগে একটি বইও সরবরাহ করেনি। তারা ১লা জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক উৎসবের অনেক পরে বই দিয়েছে। তবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু বই সরবরাহ করেছে। শৈলী প্রিন্টার্স ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বই নির্ধারিত সময়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মডেল প্রিন্টিং প্রেস গত বছর দরপত্রের শর্তনুযায়ী বই সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
পরে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করলে কালো তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এনসিটিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা নিয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষের বই ছাপার সুযোগ দিয়েছেন। এবারও এ প্রতিষ্ঠানটি সময়মতো বই ছাপাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ ব্যাপারে এনসিটিবির উৎপাদক নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত সময়ে বই দিতে ব্যর্থ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জামানত বাজেয়াপ্ত, কালো তালিকাভুক্ত করাসহ যেকোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কাজ চলছে।