নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের থেকে অর্থ আদায় চলছেই

বরিশাল প্রতিনিধি |

সরকারি নির্দেশনার বালাই নেই বরিশালে। এখানকার বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলো নানা অজুহাতে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে অর্থ। যেখানে করোনা মহামারীর কারণে সরকার বলে দিয়েছে শুধু টিউশন ফি নেয়া যাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এর বাইরে টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ এবং অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত কোনো ফি নেয়া যাবে না। সেখানে বেতন, সেশন চার্জসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের পকেট কাটা হচ্ছে। বরিশালের বেসরকারি অধিকাংশ স্কুল-কলেজেই এই অবস্থা বিরাজ করছে।

কোভিড ১৯-এর কারণে ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ভাতা টিউশন ফি নিচ্ছে বহু প্রতিষ্ঠান। এমতাবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু তাও মানছে না বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো (এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন)। বরিশাল সদর উপজেলার রামকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া, নাঈম, ফরহাদ রেজা, ৮ম শ্রেণির রায়হান, আকাশ, ৯ম শ্রেণির মারিয়া, অর্পিতা ইসলাম অভিযোগ করেছে তাদের স্কুলে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীপ্রতি ১ হাজার ৫৫০, ৯ম শ্রেণির কাছ থেকে ১ হাজার ৪৭৫, ৮ম শ্রেণিতে ১ হাজার ৩৬০, ৭ম শ্রেণিতে ১ হাজার ২৭৫ ও ৭ম শ্রেণিতে ১ হাজার ২৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে। সরকার যেখানে শুধু টিউশন ফি নিতে বলেছে এখানে আমরা এত টাকা কেন দেব? যদিও শিক্ষকরা বলছেন, তোমাদের ৬ মাসের বেতন মাফ করে দেয়া হয়েছে।

কিন্তু তারপরও কেন এত টাকা আমাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এই স্কুলের অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, এই স্কুলের ৩ শিক্ষক কোচিং করান। তাদের কাছে ছেলে বা মেয়েকে না পড়ালে পরীক্ষার ফলাফলে গরমিল হয়। এ বিষয় থেকেও আমরা পরিত্রাণ চাই। যেখানে সরকার করোনা থেকে বাঁচার জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে সেখানে দলবেঁধে কোচিং করিয়ে আমাদের করোনা ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের নজরদারি করা দরকার। শুধু রামকাঠি স্কুলেই নয়, এই ঘটনা জেলায় প্রায় প্রতিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।

রামকাঠি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নাসির মোল্লা বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২শ’/১৫শ’ টাকা না নেয়ার বিষয়ে আমি অনেক আগে থেকে বলে আসছি শিক্ষকদের। এখন তো সরকারই নির্দেশনা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করলে আমি নিজেই প্রতিবাদ করব। এ বিষয়ে আমরা সোচ্চার আছি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর কাছে আমরা কোনো টাকা-পয়সা চাইনি, নেয়াও হয়নি। ফিও নেয়া হয়নি। এমনকি শিক্ষার্থীদের কোনো চাপও দেয়া হয়নি। কিন্তু একটি গুজব ছড়ানো হয়েছে। মূলত, একজন শিক্ষক প্রাইভেট পড়ান। যিনি বিভিন্ন পরীক্ষা নিয়ে কিছু টাকা নেন বলে আমরা শুনেছি। কিন্তু স্কুলে কোনো টাকা নেয়া হয় না। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মেনহাজ সিকদার বলেন, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর আমরা টাকা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছি। সবাই বলেছি টাকা যেন না দেয়। কিন্তু নির্দেশনার আগে যদি কোনো শিক্ষার্থী অর্থ লেনদেন করে থাকে তাদের টাকাও ফেরত দেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027928352355957