নির্বাচনের আগে সরকার পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে নেতৃত্ব শূন্য করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানকে রাজনীতির বাইরে রাখতেই মিথ্যা মামলার বিচার কাজ শুরু করেছে।’
বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় চার্জ গঠন ও বিচার শুরু করায় আদালতের নির্দেশে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। বলা হয় যে, বিরোধী দলকে নির্মূল করার নীল নকশার অংশ হিসেবে ১/১১ অবৈধ সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক পরিবার শহীদ জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান জোবায়দা রহমান এবং এই জিয়া পরিবারের সব সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রহসনমূলক বিচার ও ফরমায়েসী রায় দিয়ে তাদেরকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার হীন চক্রান্ত করছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার বিচার কাজ শুরু করার লক্ষ্য হচ্ছে- অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন একটি এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। শুধু জিয়া পরিবার নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থনকারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবী মামলা, গ্রেফতার, কারাগারে নির্যাতন, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করছে সরকার। তাদের লক্ষ্য, দেশে কর্তৃত্ববাদী এক নায়েকতান্ত্রীক ফ্যাসিবাদকে চিরস্থায়ী করা।’
ঢাকা মহানগরে, বঙ্গ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘অবাধ, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন না করে বিরোধী দলের প্রতি আঙুল তোলা ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর কৌশল। অগ্নিকাণ্ডগুলোর প্রতিটাই এই অবৈধ সরকারের ব্যর্থতার কারণে হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ও সংগঠনগুলোর তদারকির অভাব, সীমাহীন উদাসীনতা এবং দুর্নীতির কারণেই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। অন্যদিকে এগুলো জনগণকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপকৌশল মাত্র।’
এ সময় অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি সরকার প্রধান শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রীদের বিএনপিকে দোষারোপ করায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান ফখরুল।
বুধবারের বৈঠকে আগামী ১ মে আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয় বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।