নির্বাচন কমিশনের কাছে বিএনপির ১০টি লিখিত অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বিএনপি। এতে ১০টি অভিযোগ করা হয়েছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রটি শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জমা দিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার কাছে তিনি অভিযোগপত্রটি জমা দেন।

অভিযোগপত্র জমা দিতে এসে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালে সকালে প্রধানমন্ত্রী একজন মেয়র প্রার্থীকে পাশে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য উনার প্রার্থীর পক্ষে, এটা শুধু নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ নয়, দেশের জন্য খারাপ একটি উদাহরণ।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে এভাবে যদি নির্বাচনকে প্রভাবিত করা হয়, এরপর আর কিছু থাকে না। প্রার্থীকে পাশে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন ভোট চান, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্টরা যে মেসেজ পাচ্ছে, তাতে তাদের হাতে কিছু থাকে না, সংশ্লিষ্ট কারও কোনও ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।’

ইভিএম বিতর্ক তুলে আমীর খসরু বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে বিতর্ক এমন এক জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে, কেউ আর ভোট দিতে আসছেন না। সত্যি কথা বলতে কি, মানুষের মনে একটা বিতর্কের সষ্টি হয়েছে। পুরো নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর অনাস্থা সৃষ্টি করতে ইভিএম একটি বড় ভূমিকা রাখছে। সেটা আজ প্রমাণ হয়েছে যে এক শতাংশ ভোট দেওয়ার ক্ষমতা প্রিজাইডিং অফিসারের রয়েছে। যাদের আঙুলের ছাপ মিলবে না তাদের ভোট দেওয়ানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে প্রিজাইডিং অফিসারকে। কিন্তু, সেটি আজ খুলে দেওয়া হয়েছে। ইভিএম ব্যবহারের পেছনে একটি অসৎ উদ্দেশ্য ছিল, সেটি আজ প্রমাণ হয়েছে। চট্টগ্রামের উপনির্বাচন ছিল পাইলট প্রকল্প, আজ পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে।’

আঙুলের ছাপ নিয়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ধর্ষণের ভয় দেখিয়ে মহিলা এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকদের যে পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়ার কথা ছিল, তা দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকদের অপমান-অপদস্থ করা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে। অস্ত্রের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

খসরু বলেন, ‘কয়দিন ধরে শুনে আসছি, যারা ঢাকার ভোটার নন, তারা ঢাকায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু, যারা এসেছেন তাদের বলা হয়েছে, বের হওয়ার জন্য। যদি বের না হোন, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু, আমরা দেখেছি, প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে শত শত বহিরাগত রয়েছে। আপনারাও দেখেছেন। সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসী নিয়ে ঢাকায় ভর্তি করা হয়েছে। বহিরাগতরা আওয়ামী লীগের ব্যাচ ব্যবহার করে দাঁড়িয়ে আছে।’

খসরু আরও বলেন, ‘পাড়া মহল্লায় সন্ত্রাসীরা ভয় দেখিয়েছে। অনেক কেন্দ্রে দেখা গেছে, ইভিএম মেশিনে ধানের শীষের প্রতীক পাওয়া যায়নি। অনেক ইভিএম নষ্ট। যেখানে ইভিএম কাজ করেছে সেখানে ৫ শতাংশ, ১০ শতাংশ ভোট। আর যেখানে ইভিএম কাজ করেনি সেখানে বেশি। আমাদের দুই প্রার্থী শুক্রবার থেকে শত শত অভিযোগ করেছে, কোনও অভিযোগের প্রতিকার পায়নি। ’

খসরু বলেন, ‘ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ কী বলছে দেশের মানুষ সেটা বিশ্বাস করছে কিনা, সেটা আজ প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ কী বলছে তা নিয়ে জনগণের মাথাব্যথা নেই। ভোট বিএনপি মেনে নেবে কিনা সেটা বড় কথা নয়, দেশের মানুষ মেনে নেবে কিনা, সেটাই বড় কথা। মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে কিনা সেটাই আজ প্রশ্ন।’

ফল মেনে নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশের মালিক নয়, জনগণ দেশের মালিক। এই ভোট জনগণ মেনে নেবে কিনা গণতন্ত্রকামী মানুষ মেনে নেবে কিনা, সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন।’ 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023329257965088