নিলাম ছাড়াই বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙে নিলেন সভাপতি

বগুড়া প্রতিনিধি |

নিলাম ছাড়াই বগুড়ার শেরপুরে গাড়ীদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ের বেশক'টি দামি গাছও কেটে নিয়েছেন তিনি। মহাসড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণের অজুহাত দেখিয়ে দু'দিন ধরে সরকারি এই বিদ্যালয়ের গাছ কাটা এবং ভবনের মালপত্র লুটের মহোৎসব চলছে। বিষয়টি সংশ্নিষ্ট দপ্তরে জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

কেটে নেয়া হয়েছে বিদ্যালয়ের মূল্যবান গাছও। ছবি : সংগৃহীত

সরেজমিন দেখা যায়, গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পাকা ভবনের সিংহভাগ ভেঙে ফেলা হয়েছে। শ্রমিকরা ভাঙার কাজ করছেন। পাশাপাশি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাগানো দামি গাছও কেটে ফেলার কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। এরপর ট্রলিতে তুলে ভেঙে ফেলা ভবনের ইট-রড, টিন-কাঠ, বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। এসব কোথায় নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ট্রলিচালক ও শ্রমিকরা জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি মোকাব্বর হোসেনের নির্দেশে এ কাজ করছেন তারা। কেটে ফেলা গাছগুলো তারই মালিকানাধীন করাত কলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান ওই শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজের জন্য ১১ শতক জমি অধিগ্রহণ করায় বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের প্রধান ফটকসহ একটি একতলা পাকা ভবন ও সেমিপাকা দুটি ক্লাসরুমসহ সব স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া বড় বড় সাতটি গাছও কেটে ফেলতে হবে। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটির মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ কারণে কমিটির কোনো বৈঠক ডাকা সম্ভব হয়নি। তাই ভবন ভাঙা ও গাছ কাটার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাড়ীদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাসহ একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে সভাপতি মোকাব্বর হোসেন আড়াই লাখ টাকায় ভেঙে ফেলা ভবনের মালপত্র ও দেড় লাখ টাকায় গাছ গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই দুই দিন ধরে আকস্মিকভাবে স্থাপনা ভেঙে ও গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এভাবে অন্তত তিন থেকে চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মোকাব্বর হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তিনি শুধু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশ পালন করছেন। তাই এ সম্পর্কে তারাই ভালো বলতে পারবেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন- এই বলে সংযোগ কেটে দেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মত মিনা খাতুন জানান, নিলাম ছাড়াই ওই বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙা হলেও ভবনের মালপত্র ও কেটে ফেলা গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য সভাপতিকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। পরে তার দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও লিয়াকত আলী সেখ এ প্রসঙ্গে বলেন, স্কুলের গাছ, ভবন ও ক্লাসরুম নিয়ম অনুযায়ী অপসারণ করার কথা। এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি সরকারি সম্পদ লুটপাট করা হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! শিক্ষককে পিটিয়ে হ*ত্যা, চাচাতো ভাইসহ গ্রেফতার ৩ - dainik shiksha শিক্ষককে পিটিয়ে হ*ত্যা, চাচাতো ভাইসহ গ্রেফতার ৩ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.017019033432007