নিয়ম ভেঙে পেনড্রাইভে বোর্ডের বাইরে এইচএসসির ফল

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষার নম্বরের অসংগতি তদন্তে গঠিত কমিটির এক সদস্য লাখো শিক্ষার্থীর ফলাফলসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সার্ভার থেকে পেনড্রাইভে করে বাইরে নিয়ে গেছেন। নিয়ম অনুযায়ী কমিটির সদস্যদের বোর্ডের ভেতরে বসে তথ্য যাচাই করার কথা।

শিক্ষার্থীদের ফলাফলসংক্রান্ত তথ্য শিক্ষা বোর্ডের পাশাপাশি ফলাফল প্রকাশে বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান টেলিটক ও বুয়েটের কাছে সংরক্ষিত থাকে। প্রতিটি শিক্ষা বোর্ড নিজেদের ফলাফল সার্ভারে সংরক্ষণ করে।

প্রয়োজনে আন্ত বোর্ড এসব ডাটা ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু এই তথ্য বাইরে গেলে তার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আন্ত বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গতকাল বলেন, ‘এটি গোপনীয় দলিল। তদন্ত কমিটি বোর্ডে বসে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই। ’

গত বছর অনুষ্ঠিত এইচএসসির ফলাফল গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। পরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর প্রদর্শনে অসংগতি দেখা গেলে এ বিষয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি বোর্ড থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রামের পটিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। অন্য দুই সদস্য হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম সাজেদুল হক এবং চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সহকারী সচিব সম্পাতা তালুকদার। সাত কর্মদিবসের মধ্যে বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এরই মধ্যে ১১ কর্মদিবস পার হয়েছে। প্রতিবেদন জমা পড়েনি।

লাখো শিক্ষার্থীর ফলাফলের তথ্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম সাজেদুল হক তথ্য নিয়ে গেছেন। ওই সময় তদন্ত কমিটির তিনজন সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। বোর্ড চেয়ারম্যানের মৌখিক ও লিখিত অনুমতির পর আমি পেনড্রাইভে যাবতীয় তথ্য দিয়েছি। ’

তবে বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা সচিব অধ্যাপক আবদুল আলীম গতকাল বলেন, ‘পেনড্রাইভে করে তথ্য নিয়ে গেছেন কি না—এ ধরনের কোনো তথ্য এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই। ’ আপনার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই তথ্য নিয়ে গেছেন—এমন প্রশ্নে তিনি আরো বলেন, ‘আমি তো এখন একটি সভায় আছি। আমি দেখে জানাব। ’ পরে তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানাননি।

তথ্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে সাজেদুল হক বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। আমরা ফলাফল বিশ্লেষণ করছি। তদন্তের পর প্রতিবেদনে জানতে পারবেন। এগুলো গোপনীয় বিষয়। ’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, ‘ডাটা (তথ্য) বাইরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমার অজান্তে হয়েছে। ’ শিক্ষা বোর্ড থেকে এ ধরনের ডাটা বাইরে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বলে স্বীকার করেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023910999298096