নিয়ম ভেঙে শিক্ষা বোর্ডের গোপনীয় শাখায় মালেক

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চট্টগ্রাম |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চট্টগ্রাম: আইন অনুযায়ী পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান পরীক্ষায় অংশ নিলে ওই পরীক্ষার গোপনীয় কাজে তারা থাকতে পারেন না। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় সন্তান অংশ নেওয়ায় পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কাজ থেকে অব্যাহতি পান চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা শাখার প্রোগ্রামার মোহাম্মদ আবদুল মালেক। তবে এর পরও তিনি গোপনীয় কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ গত বুধবার তাকে বোর্ডের গোপনীয় শাখায় দেখা গেছে। 

বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়নের কাজ চলছে। গত বুধবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সপ্তম তলায় সংরক্ষিত কম্পিউটার শাখায় যান প্রোগ্রামার মালেক। এ সময় বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ নাথ ও অস্থায়ী কম্পিউটার অপারেটর রুবেলও ছিলেন। প্রতিবেদকের হাতে আসা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মালেক গোপনীয় শাখায় কম্পিউটারে বসে কাজ করছেন। ব্লু টি-শার্ট পরা উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তাকে নিয়ে গোপনীয় শাখায় হাঁটছেন। অস্থায়ী কম্পিউটার অপারেটর রুবেল ও ওই শাখার কয়েকজনের হাতে কিছু কাগজ দেখা যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে কথা বলছেন মালেক।

উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ নাথ বলেন, মালেকের সন্তান পরীক্ষার্থী তাই তাকে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে প্রমাণ থাকার কথা জানালে তিনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এএমএম মুজিবুর রহমানও দাবি করেন মালেক পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনো কাজে জড়িত নেই। তবে প্রমাণ দেখানো হলে তিনি বলেন, গোপনীয় কাজ এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। হয়তো কোনো প্রয়োজনে যেতে পারেন। বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গোপনীয়তা ও সতর্কতার সঙ্গে করছি। বোর্ডের গোপনীয় শাখায় কাজের তথ্য কীভাবে গণমাধ্যমে গেল তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক আবদুল আলীম। তিনি বলেন, বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তান পরীক্ষার্থী থাকলে তারা পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে যুক্ত থাকতে পারেন না। এমনকি সন্তান পরীক্ষার্থী হলে প্রধান পরীক্ষকও করা হয় না। ফলে গোপনীয় কাজ ও কম্পিউটার কক্ষে যাওয়ার সুযোগ নেই। 

বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষায় বোর্ডের বর্তমান সচিব ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণচন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথের ফলাফল নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে গত সপ্তাহে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দেওয়া চিঠিতে তদন্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে ফলাফল জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে শাস্তি পাওয়া সাবেক সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খানকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে বোর্ডের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণচন্দ্র নাথ বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। ফলে ফলাফল জালিয়াতির তথ্য-প্রমাণ বা আলামত নষ্ট করতে গোপনীয় শাখায় মালেককে পাঠানো হচ্ছে। একই কারণে কিবরিয়া মাসুদ খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত ৪৫ লাখ - dainik shiksha বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত ৪৫ লাখ স্কুল-কলেজ ভবন নির্মাণে ৫ শতাংশ কমিশন নিতেন দীপু মনির ভাই টিপু - dainik shiksha স্কুল-কলেজ ভবন নির্মাণে ৫ শতাংশ কমিশন নিতেন দীপু মনির ভাই টিপু বন্যার্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা পাঠাবেন যেভাবে - dainik shiksha বন্যার্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা পাঠাবেন যেভাবে ঢাবি অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজে ভর্তির টাকা জমা দেয়ার সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha ঢাবি অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজে ভর্তির টাকা জমা দেয়ার সময় বৃদ্ধি নতুন শিক্ষাক্রম সংস্কার নয়, বাতিল চাই - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম সংস্কার নয়, বাতিল চাই দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027990341186523