নিয়োগ না হওয়ায় হতাশ নিবন্ধনের মৌখিকের পরীক্ষার্থীরা

রুম্মান তূর্য |

শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারীদের নিয়োগ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে চতুর্দশ নিবন্ধনের মৌখিকের পরীক্ষার্থীরা বলেছেন, “পরীক্ষা দিচ্ছি সার্ফিকেটটা নিজের কাছে রাখতে, নিয়োগ পাবো কি না জানিনা, পরীক্ষা কেন দিচ্ছি? যদি চাকরিই না হয়, নিয়োগ নিয়ে আমরা সন্দিহান, কতজন চাকরি পাবেন কবে চাকরি পাবেন আমরা জানিনা।” নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিস্কারভাবে বোধগম্য নয় বলেও জানিয়েছেন তারা। রাজধানীর ইস্কাটনের এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে মৌখিক পরীক্ষা শেষে দৈনিক শিক্ষার কাছে নিজেদের মন্তব্য ও মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা বর্ননা করেছেন।  

বুধবার (৪ জুলাই) নিবন্ধনের মৌখিকের ৯ম দিনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৮টি বোর্ডে গঠন করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ স্কুল পর্যায়ের ৪০৪ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় আজ।

একজন পরীক্ষার্থী বলেন,“এনটিআরসিএর হাতে থেকেই নিয়োগ হচ্ছেনা, সংসদীয় কমিটির সুপারীশ মতে কমিটির হাতে নিয়োগ চলে গেলে প্রার্থীদের আরো অসুবিধা বেড়ে যাবে। আগেতো কমিটিই নিয়োগ দিতো। সমস্যাতো তখন থেকেই বাড়েছে।” 
অপর এক পরীক্ষার্থী বলেন, “নিয়োগ হচ্ছেনা দেখে সবাই হতাশ। পরীক্ষা দিচ্ছি সার্ফিকেটটা নিজের কাছে রাখতে, নিয়োগ পাবো কিনা জানিনা।”  উত্তরবঙ্গ থেকে আসা অপর এক প্রার্থী বলেছেন, “নিয়োগ তরান্বিত করা উচিত। লিখিত পরীক্ষায় অনেকেই প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ হলেও কতজন চাকরি পাবে আমরা জানি না। কবেই বা তারা চাকরি পাবে তাও বলা যায় না।”
নওগাঁ থেকে আসা এক প্রার্থী এনটিআরসিএ এর নিয়োগ নিয়ে বলেছেন,“নিয়োগ নিয়ে তো আমরা সন্ধিহান।পর্যন্ত কোন সিনিয়রকে দেখি নাই এনটিআরসিএ থেকে নিয়োগ পেয়েছে।”  

কিশোরগঞ্জ থেকে আসা নাসরিন মাহমুদা বৃতি মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা বর্ননা করে বলেন, “শেক্সপিয়রের লেখা কয়েকটি ট্রাজেডির নাম বলতে বলেছেন। কিং লিয়ারের কয়জন কন্যা সন্তান ছিল তাদের মধ্যে কাকে ভালো লাগে জানতে চেয়েছেন। মাস্টার্স করছি জানতে পেরে আমাকে সাহিত্য থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয়েছে।”  

নওগাঁ থেকে আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী গোলাম মোর্শেদ জানান, “বর্তমানে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নাম বলতে বলেছেন। ‘দ্যা আর্মস এন্ড দ্যা ম্যান’ কেন এন্টি রোমান্টিক ড্রামা জানতে চেয়েছেন। শেক্সপিয়রের ট্রাজেডির বৈশিষ্ট্য জানতে চেয়েছেন।”

ময়মনসিংহ থেকে আসা স্কুল পর্যায়ের প্রার্থী মো: খায়রুল ইসলাম শাহীন বলেন, “আমার নিজের জেলার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। গ্রামার থেকে জিরান্ড ও ইনফিনিটিভ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে। সাহিত্য থেকে তেমন কিছু জিজ্ঞেসা করেননি।” 

দিনাজপুর থেকে আসা মো: ইব্রাহীম বাবু বলেন, “আমার শিক্ষা জীবন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে পড়ালেখা করেছি বললে নিজ কলেজ সম্পর্কে ইংরেজিতে বলতে বলেছেন। একটি ট্রান্সলেশন করতে দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, সাহিত্য থেকে প্রশ্ন করা হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু সাহিত্য থেকে কোন প্রশ্ন করা হয়নি। 

নওগাঁ জেলা থেকে আসা শাকিল আল ওয়ালিদ বলেন, “শিক্ষকতা কেন করতে চাই ইংরেজিতে বলতে বলেছেন। নিজ সম্পর্কে ইরেজিতে বলতে বলেছেন। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা সম্পর্কে বলতে বলেছেন। কোন কোন দিকে থেকে বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে জানতে চেয়েছেন।” 

তিনি আরও বলেন, মেধাতালিকার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানাই আমরা সবাই। স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হলে মেধাবীরা বঞ্চিত হবেন। 

জয়পুরহাট জেলা থেকে আসা মো:মাহবুব হোসেন জানান, ‘মে আই কাম ইন স্যার’ বাক্যটি লিখতে বলেছেন। ‘ইট মে রেইন’ কোন ধরণের বাক্য জানতে চেয়েছেন। একটি অশুদ্ধ বাক্য শুদ্ধ করতে বলেছেন। খুব বেশিক্ষণ প্রশ্ন করেননি ভাইভা বোর্ড।” 

নেত্রকোণা থেকে আসা ইব্রাহীম মাহমুদ মনির বলেন, প্রথমে টেন্স থেকে একটি প্রশ্ন করেছেন এবং একটি ভয়েস চেঞ্জ করতে বলেছেন। একটি বাক্যের ভুল সংশোধন করতে দিয়েছেন। এছাড়া আমার একাডেমিক জীবন সম্পর্কে ইংরেজিতে বলতে বলেছেন।

খুলনা থেকে আসা মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “আমার নিজ পরিচয় ইংরেজিতে বলতে বলেছেন। আমাকে লিটারেরি কনটেম্পোরারিস সম্পর্কে জিজ্ঞেসা করেছেন। একটি বাক্যের ভুল সংশোধন করতে দিয়েছিলেন।”

দিনাজপুরের পরীক্ষার্থী বখতিয়ার প্রামাণিক জানান, “প্লে এবং ড্রামার মধ্যে পার্থক্য কি জানতে চেয়েছেন। এরপর জিজ্ঞেসা করেছেন ট্রাজেডি কত প্রকার।”

কাল বৃহস্পতিবার মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।   


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043480396270752