নেছারাবাদের ৬৫ স্কুলে শিক্ষার্থী ৫০ জনের নিচে

দৈনিক শিক্ষাডটকম, পিরোজপুর |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, পিরোজপুর : শিক্ষার্থীসংকটে দুরবস্থার মুখে পিরোজপুরের নেছারাবাদের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। উপজেলার অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়েই নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া ২-৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে ডজনখানেক বিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থী নেই এমন বিদ্যালয়ও রয়েছে উপজেলাটিতে।

অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোরালো নজরদারির অভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটিকে নানা ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৬৯টি। এর মধ্যে ৬৫টিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৫০-এর নিচে। ১০ থেকে ১২টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৭-৮ জনের মতো। একটি বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী নেই। অথচ প্রতিটি বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষকও রয়েছেন।  

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ ধলহার আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীও নেই। অথচ দুজন শিক্ষককে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া গনপতিকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাগজে-কলমে ১৪ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে ৭-৮ জন শিক্ষার্থী। অথচ সেখানে শিক্ষক চারজন। দুই বছর আগে এ বিদ্যালয়ের জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি তিনতলা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারযোগ্য স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়।

থালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাগজপত্রে ৩৭ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে আছে ১৮-২০ জন। ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ছয়জন। সম্প্রতি দুজন শিক্ষককে ডেপুটেশনে অন্য বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।

শান্তিহার কুনিয়ারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাগজপত্রে ১৯ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে আছে ১২-১৪ জন। এ বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরে শান্তিহার নামক আরেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একই দশা।

মৈশানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আছে ১৯ শিক্ষার্থী। পশ্চিম জৌশার, জুলুহার মঠবাড়ি, সৌমিক মেমোরিয়াল, রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্যাসকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রমেশচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ৩০ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০-এর নিচে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ৪ থেকে ৫ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ ধলহার আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী না থাকা সত্ত্বেও দুজন শিক্ষককে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেয়া হচ্ছে। চলতি বছর একজন শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়নি ওই বিদ্যালয়ে। উপরন্তু পুরোনো ২-৪ জন যারা ছিল, তারাও অন্যত্র চলে গেছে।

এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা নুরজাহান বলেন, গত বছর ৪-৫ জন শিক্ষার্থী থাকলেও এবার একজনও ভর্তি হয়নি। তিনি বদলি হওয়ার জন্য বারবার আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান।

থালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিত্যানন্দ বেপারী বলেন, ‘এলাকাটি হিন্দু-অধ্যুষিত। এখানে জন্মহার একেবারেই কম। এ কারণে শিক্ষার্থীসংকট কাটানো কঠিন কাজ।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন খলিফা বলেন, শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটিকে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টিসহ নানা ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি - dainik shiksha কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত - dainik shiksha মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.012586116790771