পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) ছাত্রদলের বাধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময় সভা পণ্ড হয়ে গেছে।
দেশ পূনর্গঠনের লক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দেশব্যাপী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার অংশ হিসেবে পবিপ্রবিতে আসেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদসহ একটি প্রতিনিধি দল।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ক্যাম্পাসে উপস্থিত হতে পারেননি সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। অভিযোগ পাওয়া যায়, স্থানীয় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তাকে ক্যাম্পাসে আসতে বাধা দেন।
নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর সভা শুরু হলে বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্রদলপন্থি কিছু শিক্ষার্থী অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করার মাধ্যমে আব্দুল হান্নান মাসুদকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে আব্দুল হান্নান সোহাগের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এবং ব্যানার ছিড়ে অনুষ্ঠানটি পণ্ড করে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই অনুষদের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী তানভির আহমেদ ও একই সেশনের শিক্ষার্থী সালমান রহমান ফিয়াদের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এই বিশৃঙ্খলা করেন। এ সময়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীকে জড়ো হতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী নূর নবী সোহান বলেন, ক্যাম্পাসের কিছু শিক্ষার্থী পূর্বপরিকল্পিতভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিমিয় সভা পণ্ড করার লক্ষ্যে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেন। একপর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অনুষ্ঠানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন ও সমন্বয়কদের অপমান করেন।
কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান মিলু বলেন, এই বিশৃঙ্খলা পূর্বপরিকল্পিত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতরে বহিরাগতদের শোডাউন দুঃখজনক। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে রুখে দেবো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, আমরা অনেক জায়গায় গিয়েছি কিন্তু কোথাও এমন পরিস্থিতে পড়তে হয়নি। ক্যাম্পাসে ঢোকার আগে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা আসতে বাধা দেন। ক্যাম্পাসের ভেতরে বিএনপিপন্থি শিক্ষার্থীরা হেনস্তা করেছেন।
এ সময় তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে হতাশ না হয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর জিল্লুর রহমান, প্রক্টর আবুল বাশার ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর হেমায়েত জাহানসহ শিক্ষকদের একটা টিম আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলধারার সংগঠন ব্যতীত সবধরনের সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন এই মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন।