পরিবেশ সুরক্ষিত তো আমরা সুরক্ষিত

ইমরান ইমন |

পরিবেশ বলতে আমাদের চারপাশের প্রাকৃতিক ও সামাজিক অবস্থাকে বুঝানো হয়ে থাকে। তবে ব্যাপক অর্থে পরিবেশ বলতে বিশ্ব প্রকৃতির পরিবেষ্টনির সামগ্রীক অবস্থাকে বোঝায়। পরিবেশ মানবসভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সভ্যতার সৃষ্টিলগ্ন থেকেই মানুষ গড়ে তুলেছে তার চারপাশের পরিবেশ।

পরিবেশই প্রাণের ধারক, জীবনীশক্তির বাহক। সৃষ্টির শুরু থেকেই পরিবেশের সঙ্গে প্রাণীর মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতার ওপরেই তার অস্তিত্ব নির্ভর করে আসছে। পরিবেশ প্রতিকূল হলে জীবের ধ্বংস ও বিনাশ অবশ্যম্ভাবী। পরিবেশের ওপর নির্ভর করে মানুষ, অন্যান্য উদ্ভিদ ও প্রাণী-জীবনের বিকাশ ঘটে। তাই পরিবেশ ও মানুষের মধ্যে রয়েছে এক নিবিড় যোগসূত্র। কিন্তু নানা কারণে পরিবেশ দূষণ সমস্যা প্রকট হওয়ায় মানবসভ্যতা আজ চরম হুমকির সম্মুখীন। এ থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে চলছে নানা ধরনের গবেষণা। বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণ নিয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘ ৫ জুনকে ঘোষণা করেছে  ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে।

তবে এ 'বিশ্ব পরিবেশ দিবস' সৃষ্টির পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠায় সুইডেন সরকার। চিঠির বিষয়বস্তু ছিলো প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা। সে বছরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সাধারণ অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের উপায় খুঁজতে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ থেকে ১৬ জুন জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সম্মেলনে বিশ্বের ১১৯টি দেশ অংশ নেয়। সম্মেলনটি ইতিহাসের প্রথম পরিবেশ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের স্বীকৃতি পায়। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের সম্মেলনের প্রথম দিন ৫ জুনকে জাতিসংঘ 'বিশ্ব পরিবেশ দিবস' হিসেবে ঘোষণা দেয়। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৫ জুন বিশ্বব্যাপী ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ পালিত হয়ে আসছে।

২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘Land restoration, desertification and drought resilience’। অর্থাৎ, ‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা/ অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা’। এ বছর ৫২তম বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত হচ্ছে।

আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন প্রকৃতি ও পরিবেশ। কিন্তু প্রতিনিয়ত এ প্রকৃতি ও পরিবেশকে আমরা নানাভাবে দূষিত করে আসছি। বিশ্বজুড়ে এখন পরিবেশ দূষণের মাত্রা ভয়াবহ। পরিবেশ দূষণের উল্লেখযোগ্য কারণের মধ্যে রয়েছে-অত্যাধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত নগরায়ন, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন ও বনভূমি উজাড়, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, দ্রুত শিল্পায়ন, সার ও কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, শিল্প-কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ, গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া, ওজোন স্তরের ক্ষয়, এসিড বৃষ্টি, অপরিকল্পিত গৃহ নির্মাণ, দারিদ্র্যতা, প্রসাধন সামগ্রী, প্লাস্টিক দ্রব্যের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ইত্যাদি।

মানুষ একদিন প্রকৃতিকে জয় করার নেশায় মত্ত হয়েছিলো। প্রকৃতিকে জয় করেও মানুষের সেই নেশার অবসান হল না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ জলে-স্থলে মহাশূন্যে আধিপত্য বিস্তার শুরু করলো। কিন্তু মানুষের এই বিজয় মানুষকে এক পরাজয়ের মধ্যে ফেলে দিলো। আজ আমরা এক ভয়ংকর সংকটের মুখোমুখি। এ সংকট বিশেষ কোনো দেশের নয়, বিশেষ কোনো জাতিরও নয়। এ সংকট আজ বিশ্ব জুড়ে। বিশ্বের পরিবেশ আজ নানাভাবে দূষিত। এই দূষণ আজ ভয়ংকর ভবিষ্যতের দিকে আমাদের নিয়ে যাচ্ছে। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে আজ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। অপেক্ষা করছে এক মহাধ্বংস! আজ জলে বিষ। বাতাসে আতঙ্ক। মাটিতে মহাত্রাস। আজ বিগত ৬০ বছরে ৮০টির বেশি প্রজাতির প্রাণী নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কয়েক’শ প্রজাতির গাছপালা বিলুপ্ত।

আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। এ পরিণামে বাতাসে প্রতিবছর ২২ কোটি টন কার্বন মনোক্সাইড সঞ্চিত হচ্ছে। বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসের আনুপাতিক হার ক্রমশই বাড়ছে। এর ফলে বৃষ্টির জলে অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি হচ্ছে। এই অ্যাসিড বর্ষণ অরণ্যে মহামারীর সৃষ্টি করছে। খাদ্যশস্যকে বিষাক্ত করছে। দ্রুত গতিতে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সবুজ অরণ্য। সারা বিশ্বে বর্তমান মোট ৮০ শতাংশ হল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্য। এর মধ্যে প্রতি মিনিটে ২১ হেক্টর কৃষিযোগ্য জমি বন্ধ্যা হয়ে গেছে। প্রতিবছর ৭৫ লক্ষ হেক্টর জমি মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। প্রতি মিনিটে ৫০ হেক্টর উর্বর জমি বালুকাকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর বাতাসে বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন কমছে। বিজ্ঞানের অপব্যবহারে ভূ-প্রকৃতির ওপর অত্যাচার বাড়ছেই। শস্য রক্ষার জন্য নানা ধরনের কীটনাশক ওষুধ তৈরি ও প্রয়োগ হচ্ছে। এইসব বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্যের অনুপ্রবেশ ঘটছে মানুষের শরীরে। ফলে নানা জটিল ও কঠিন রোগের দানা‌ বাঁধছে আমাদের শরীরে।

পরিবেশ দূষণের জন্য পৃথিবীতে ৮০ শতাংশ নিত্য-নতুন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পানিতে পরিণত হচ্ছে। বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরের আয়তন ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। ফলে সূর্যের মারাত্মক অতিবেগুনি রশ্মি প্রাণিজগৎকে স্পর্শ করবে। দূষণের ফলে উদ্ভিদ ও জীবজগৎ আজ বিপন্ন। সমুদ্রে-নদীতে-জলাশয়ে মাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে। মাছের শরীরে নানা রোগ দেখা দিচ্ছে।

আমাদের দেশের পরিবেশ দূষণের মাত্রা আরো ভয়াবহ। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণ ও পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে প্রতিবছর যতো মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশ দূষণজনিত রোগব্যাধির কারণে। কিন্তু সারা বিশ্বে এ ধরনের মৃত্যুর গড় হার মাত্র ১৬ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের ওই পরিসংখ্যানে আরো বলা হয়েছে, শহরাঞ্চলে এই দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তুলনা করতে গিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবেশ দূষণজনিত কারণে বাংলাদেশে যেখানে ২৮ শতাংশ মৃত্যু হয় সেখানে মালদ্বীপে এই হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ আর ভারতে ২৬ দশমিক ৫।

পরিবেশ দূষণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো বায়ুদূষণ। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান লরেন্স বের্কলি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি বলছে, রাসায়নিক মিশ্রণ আছে এমন দূষিত বায়ুর সংস্পর্শে থাকলে চোখ, নাক বা গলায় সংক্রমণ অথবা ক্ষতির কারণ হতে পারে, সেই সঙ্গে ফুসফুসের নানা জটিলতা যেমন- ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া, মাথাব্যথা, অ্যাজমা এবং নানাবিধ অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বায়ুদূষণের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্কও দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস’ প্রকল্পের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৬ বছর। এক বছর আগে একই সময়ে এ গড় আয়ু ছিল ৭২.৩ বছর। তবে বাড়তির দিকে থাকা এই গড় আয়ু বায়ুদূষণ অব্যাহত থাকলে এক লাফে নেমে যেতে পারে ৬৭ বছরে! বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মানুষ দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশ—বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে বসবাস করে। এ চার দেশে বায়ুদূষণের মাত্রাও বেশি। গত এক দশক ধরে ৪৪ শতাংশ বায়ুদূষণ বাড়ায় এ চার দেশের মানুষের গড় আয়ু অন্তত গড়ে পাঁচ বছর কমে যেতে পারে। আর বিশ্বব্যাপী এ গড় আয়ু হ্রাস পেতে পারে কমবেশি তিন বছর। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৩৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে দূষিত বায়ু ঢাকা এবং খুলনা অঞ্চলে। এ দুই অঞ্চলে বসবাসরত মানুষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনের আট গুণ বেশি দূষিত বায়ুতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন। বিশ্ব জুড়ে বাতাসে পিএম-২.৫ বায়ুকণার ২৫ শতাংশ সরবরাহ করছে যানবাহন। ২০ শতাংশ আসছে কাঠ ও কয়লা পোড়ানোর কারণে। এ ছাড়া বায়ুতে ১৫ শতাংশ অতি সূক্ষ্ম পদার্থের জন্য দায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য শিল্পকারখানা।

আন্তর্জাতিক জার্নাল কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণায়, বায়ুদূষণকে ‘মহামারি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বায়ুদূষণের কারণে সারা বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু প্রায় তিন বছর কমেছে। অকালে মারা যাচ্ছে প্রায় ৮৮ লাখ মানুষ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—তেল, গ্যাস, কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন দূষণ সৃষ্টিকারী কণার প্রভাব মানুষের ফুসফুসে প্রায় এক বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। গবেষণার প্রধান লেখক জস লেলিয়েভেল্ড বলেন, জনস্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের প্রভাব ধূমপানের চেয়েও ক্ষতিকর। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে এই ক্ষতি কমানো সম্ভব। মহামারির তুলনায় বায়ুদূষণেই বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। ম্যালেরিয়ার তুলনায় ১৯ গুণ এবং এইডসের তুলনায় প্রায় ৯ গুণ বেশি মানুষ বায়ুদূষণের কারণে অকালে মারা যাচ্ছেন। বায়ুদূষণ থেকে কেবল ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন প্রায় ৬ শতাংশ মানুষ। এর প্রভাবে ফুসফুসের অন্যান্য রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় এশিয়ায় বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি। বায়ুদূষণের কারণে চীনে ৪ দশমিক ১, বাংলাদেশে ৪ দশমিক ৭, ভারতে ৩ দশমিক ৯ এবং পাকিস্তানে ৩ দশমিক ৮ বছর গড় আয়ু কমেছে। গবেষক টমাস মাঞ্জেল বলেন, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অকালমৃত্যুর জন্য মূলত মানবসৃষ্ট দূষণই দায়ী। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে বছরে প্রায় ৫৫ লাখ মানুষকে অকালমৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।

পরিবেশ মন্ত্রণালয় বায়ুদূষণের জন্য ২০টি কারণ চিহ্নিত করেছে। এগুলো হলো—ইটভাটা, রাস্তা নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ ও মেরামত, সেবা সংস্থাগুলোর নির্মাণকাজ ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, বড় উন্নয়ন প্রকল্প (এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল), সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, সড়ক বা মহাসড়কের পাশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বালু উত্তোলন ও সংগ্রহ, ট্রাক বা লরিতে বালু, মাটি, সিমেন্টসহ অন্য নির্মাণসামগ্রী উন্মুক্ত অবস্থায় পরিবহন, রাস্তায় গৃহস্থালি ও পৌর বর্জ্য স্তূপাকারে রাখা ও বর্জ্য পোড়ানো, ড্রেন থেকে ময়লা তুলে রাস্তায় ফেলে রাখা, ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করতে গিয়ে ধুলাবালি ছড়ানো, বিভিন্ন সড়কের পাশে থাকা অনাবৃত স্থান, ফুটপাত ও রাস্তার আইল্যান্ডের মধ্যের ভাঙা অংশের মাটি ও ধুলা, ফিটনেসবিহীন পরিবহন থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকর ধোঁয়া, বিভিন্ন যানবাহনের চাকায় লেগে থাকা কাদামাটি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি কলোনির ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো, বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমল ও বাণিজ্যিক ভবনের আবর্জনা ও ধুলাবালি রাস্তায় ফেলে দেয়া, ঢাকা শহরের দূষণপ্রবণ এলাকার ধুলা, হাসপাতালের বর্জ্য রাস্তায় ফেলা, অধিক সালফারযুক্ত ডিজেল ব্যবহার এবং জনসচেতনতার অভাব।

পরিবেশ অধিদপ্তরের গবেষণায় বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটার ধোঁয়া ৫৮ শতাংশ দায়ী। বাকি ৪২ শতাংশের জন্য দায়ী নির্মাণ ও মেরামতকাজের সঙ্গে আসা ধুলা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন থেকে বের হওয়া ধোঁয়া। তাছাড়া বর্তমান সময়ে আবহাওয়া-জলবায়ুর পরিবর্তন, তীব্র গরম, বৃষ্টিহীন অবস্থা এসব কিছুর মূলে রয়েছে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ।

পরিবেশই আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন। পরিবেশ দূষণ মুক্ত থাকলে আমরা মুক্ত থাকবো বিভিন্ন জটিল-কঠিন রোগ‌, দুর্যোগ ও মহামারি থেকে। পরিবেশ সুরক্ষিত থাকলে আমরা থাকবো সুরক্ষিত। আসুন পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হই, অন্যকেও সচেতন করে তুলি। পৃথিবীটাতে বাসযোগ্য করে তুলি, ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করি।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ - dainik shiksha সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে রেজাউল করীম - dainik shiksha মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে রেজাউল করীম শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের জন্য বল প্রয়োগ করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের জন্য বল প্রয়োগ করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের - dainik shiksha গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের শিক্ষায় আমূল সংস্কারের উদ্যোগ নেবো: ড. ইউনূস - dainik shiksha শিক্ষায় আমূল সংস্কারের উদ্যোগ নেবো: ড. ইউনূস মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে রেজাউল করীম - dainik shiksha মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে রেজাউল করীম শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে অধ্যাপকদের অনলাইনে বদলির আবেদন শুরু ১ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha অধ্যাপকদের অনলাইনে বদলির আবেদন শুরু ১ সেপ্টেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028688907623291