পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীর ‘অশোভন’ আচরণের শিকার হয়ে পদত্যাগ করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষক। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরীক্ষা চলাকালে বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক বাপন চন্দ্র কুরির সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন শেখ; যাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে গতকাল বুধবার ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবায়ের সাব্বির বলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমন শেখ পরীক্ষা চলাকালে বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বাপন চন্দ্র কুরির সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং একপর্যায়ে কলম ছুড়ে মারেন। এর পরপরই স্যার রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
মানববন্ধনে আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হুমায়ুন কবির বলেন, শুধু কি বাপন চন্দ্র কুরি স্যার চলে গেছেন? আমার বিভাগের একজন শিক্ষক এসব অন্যায়-অনিয়ম সহ্য করতে না পেরে চলে গেছেন। প্রতিনিয়তই নীরবে-নিভৃতে আমরা এসব সহ্য করে যাচ্ছি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন আছে, কিন্তু কোনো অ্যাক্টিভিটি নেই। এখানে আমরা যেন যুদ্ধের বিপরীতে যুদ্ধ করছি। সবাই যে যার স্বার্থে জড়িয়ে পড়েছি। কখনো আমরা সামষ্টিক চিন্তা করি না।
বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক এমদাদুল হক শরীফ বলেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে আমরা রাজপথে নেমে আসি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হলে কখনোই প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখিনি। এর ফলেই প্রতিনিয়ত এ ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। প্রশাসনের আপসকামিতার মনোভাবের কারণেই অপরাধীচক্র বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সালেহ আহমেদ বলেন, আমি বাপন চন্দ্র কুরিকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি।
নিপাট ভদ্রলোক বলতে যা বোঝায় তিনি সে রকমই একজন। তিনি চরম রেগেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চলে গেছেন। মানুষ যখন গর্জন করে, তখন সেটা হলো সবচেয়ে কম রাগ। কিন্তু যখন সে কাউকে না জানিয়ে নীরবে-নিভৃতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চলে যান, তখন বুঝতে হবে তার রাগের মাত্রা, ক্ষোভের মাত্রা, বিরক্তিকর মাত্রা চরম পর্যায়ের।তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে যাব, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাইব এবং তিনি যেন সুষ্ঠু পরিবেশসহ সসম্মানে ফেরত আসতে পারেন এ দাবি জানাব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব জানান, ওই শিক্ষার্থীকে আমরা সাময়িক বহিষ্কার করেছি। আর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির যে সাজেস্ট করবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।