ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে এক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন সময় আশা রহমান নামে এক শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে তার সহকর্মীর বিরুদ্ধে।
শিক্ষিকার অভিযোগ, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল আমীন তাকে লাঞ্ছিত করেছেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে বাঘৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনসুর আহমেদের মেয়ের জামাই অভিযুক্ত শিক্ষক আল আমীন আর মেয়ে তাসলিমা আক্তার স্কুলের অফিস সহকারী। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান আবুল মনসুর আহমেদ। এরপর মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে স্কুলে নিয়োগ দেন। শ্বশুর, জামাই আর মেয়ে মিলে ইচ্ছেমতো স্কুল পরিচালনা করছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক ও স্টাফরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। আমাদের বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা তাদের কথামতো না চললে হুমকি দেওয়া হয়।
শিক্ষিকা আশা রহমান বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালীন রুমে ঢুকে শিক্ষক আল-আমীন আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সত্ত্বেও আমার গায়ে হাত তোলেন। নিজের আত্মরক্ষার জন্য আমার স্বামীকে ফোন দিয়ে নিয়ে এলে প্রধান শিক্ষক বহিরাগত লোকজন স্কুলে এনে আমার স্বামীকে আক্রমণের চেষ্টা করেন। স্কুলের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে দেন। আমি এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষকের জামাতা ওই শিক্ষক ক্লাসে ঢুকে ম্যামকে অকথ্য ভাষায় গালাগালা করেন। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে অন্তঃসত্ত্বা ম্যাডাম আঘাত পান। আমরা এ অন্যায়ের বিচার দাবি করছি। শিক্ষক আল-আমীন ও তার স্ত্রী তাসলিমা বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।
অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাঘৈর হাইস্কুল পরিবারতন্ত্রের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তার মেয়েকে স্কুলের অফিস সহকারী পদে চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। অফিস সহকারী পদে থেকেই সব শিক্ষকদের তার নির্দেশেই চলতে হয়। এরপর মেয়ে জামাই আল-আমীনকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, ‘হাতাহাতির অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সমাধান করে দিয়েছেন। আর অন্যান্য অভিযোগ সত্য নয়।’
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া বলেন, ‘শিক্ষকদের এ ধরনের দ্বন্দ্ব অপ্রত্যাশিত। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে এর প্রভাব পড়বে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’