পাবনা শহরতলীর একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মিডটার্ম পরীক্ষা চলাকালে সশস্ত্র অবস্থায় একদল সন্ত্রাসী সম্রাট হোসেন (১৮) নামের এক পরীক্ষার্থীকে প্রকাশ্য অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার দুঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের সিংগা এলাকার ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড টেক্সাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ক্যাম্পাসে।
শিক্ষার্থীরা জানান, শহরের অদূরে বলরামপুরের রওশন আলীর ছেলে পাবনার ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড টেক্সাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিভিল শাখার প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষার্থীর সাথে ক্যাম্পাসের সামনে সিংগা-শহর রোডে অটোবাইকের সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে অটোবাইক চালকের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। সকাল ১০টা থেকে কলেজে মিডটার্ম পরীক্ষা শুরু হয়। যথারীতি সম্রাট হোসেনও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এদিকে এ ঘটনার জের ধরেই অটোবাইক চালক সশস্ত্র অবস্থায় ১২/১৫ জনের একদল সন্ত্রাসীকে সাথে নিয়ে কলেজে এসে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করে। এরপর পরীক্ষার্থী সম্রাটকে মারপিট করে অস্ত্র ও ধারালো চাকু ঠেকিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সম্রাটের সহপাঠীরা এগিয়ে আসলে। তাদেরকে সন্ত্রাসীরা এলোপাথাড়ি মারপিট করে সম্রাটকে নিয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লে কলেজের সকল শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অপহরণের শিকার সম্রাটের ভাবী সুরাইয়া খাতুন বলেন, দুপুর বারোটার দিকে অটোযোগে সম্রাটকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তিনি দাবী করেন, বেধড়ক মারপিট করেছে সম্রাটকে।
আইটিটিইর পরিচালক ও অধ্যক্ষ এস এম মাহমুদ হোসেন জানান, আমার প্রতিষ্ঠানে এক ছাত্রের সাথে তুচ্ছ বিষয়ে অটোবাইক চালকের কথাকাটাকাটি হয়েছে। বিষয়টি জানার পরপরই ওই অটোচালককে ডেকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ততক্ষণেই পরীক্ষার হল থেকে সম্রাটকে সশস্ত্র অবস্থায় তুলে নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ভাবেই পুলিশে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের কারণেই সম্রাটকে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা ফেরত দিয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্র নিয়ে এসে পরীক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাবে এটা মেনে নেয়া যায় না। শিবলী এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনী শাস্তির ব্যবস্থার দাবী জানান।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করা হয়। ঘটনাটি পূর্ব-বিরোধ দাবী করে ওসি রাজ্জাক বলেন, মঙ্গলবার সকালে সম্রাটসহ তার অন্য সহপাঠীরা এক অটোচালককে তুচ্ছ ঘটনায় বেধড়ক মারপিট করে। অটোবাইক চালককে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কয়েকজন অটোচালক সম্রাটকে তুলে এনে মারপিট করে পুলিশের না দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। কলেজের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীদের সনাক্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলেই উভয়পক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।